মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

পশ্চিম তীরজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান, নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ

পশ্চিম তীরজুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযান, আল-বিরায় নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ
গাজায় চলমান আগ্রাসনের পাশাপাশি পশ্চিম তীরে হামলা ও দমন-পীড়ন আরও বাড়িয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। ছবি : ফরাসি সংবাদমাধ্যম

দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বুধবার সন্ধ্যায় পশ্চিম তীরজুড়ে অভিযান চালিয়েছে। তারা উত্তরাঞ্চলের নাবলুস ও তুবাস শহর এবং দক্ষিণাঞ্চলের হেবরনের বেইত উমর গ্রামে অভিযান চালায়।

এদিকে ফিলিস্তিনি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, রামাল্লার মধ্যাঞ্চলের আল-বিরা শহরের আমারি শরণার্থী শিবিরে ফিলিস্তিনি যুবকদের সঙ্গে ফাতাহ সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। মাত্র দুই সপ্তাহ আগে ইসরায়েলি কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া এক সাবেক বন্দিকে আটকের পর এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

অন্যদিকে জেনিন শহরের দক্ষিণে কাবাতিয়া ও মিসিলিয়া এলাকায় বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালিয়ে দুই ফিলিস্তিনি যুবককে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

আল-জাজিরা জানিয়েছে, ওই দুই যুবক অভিযানের সময় একটি গুহায় আশ্রয় নিলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ও রকেট নিক্ষেপ করে ইসরায়েলি বাহিনী। এতে ঘটনাস্থলেই তারা নিহত হন। পরে সেনারা বুলডোজার দিয়ে গুহার চারপাশ গুঁড়িয়ে দেয় এবং নিহতদের মরদেহ সঙ্গে নিয়ে যায়। ফিলিস্তিনি সূত্র বলছে, মরদেহ অবমাননাও করা হয়েছে।

হেবরনে অভিযান, দোকানপাট বন্ধ

হেবরন শহরের কেন্দ্রস্থলের বাব আল-জাওয়িয়া এলাকায় অভিযান চালায় ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তারা ওই এলাকার প্রধান সড়ক বীর আল-সাবা রোড বন্ধ করে দেয়। এতে ইহুদি বসতকারীরা একটি প্রাচীন স্থানে প্রবেশের সুযোগ পায়।

বসতকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ওই এলাকায় বড় সংখ্যায় সেনা মোতায়েন করা হয়। দোকানপাট জোরপূর্বক বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

হেবরনের কেন্দ্রস্থলের দোয়ার আল-সাহা এলাকায়ও অভিযান চালায় সেনারা। সেখানে তারা টিয়ার গ্যাস ছোড়ে।

এ সময়ের মধ্যে কয়েক হাজার ইসরায়েলি বসতকারী হেবরনের ইব্রাহিমি মসজিদে প্রবেশ করে তালমুদীয় ধর্মীয় আচার ও উৎসবে অংশ নেয়। এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন গিভির।

নাবলুসে হামলা, জেনিনে শহীদদের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেওয়া

নাবলুসের উপকণ্ঠের বুরকা গ্রামে ফিলিস্তিনিদের পাথর নিক্ষেপে একটি পর্যটকবাহী বাসে থাকা দুই মার্কিন নারী সামান্য আহত হন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সম্প্রচার কর্তৃপক্ষ।

এই ঘটনার পর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ওই গ্রামের প্রবেশপথে সামরিক চৌকি স্থাপন করে এবং পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে যৌথভাবে তল্লাশি অভিযান শুরু করে।

একই সময়ে ইসরায়েলি বাহিনী জেনিন শহরের পশ্চিমাংশের হারশ আস-সা’দা এলাকায় শহীদ হামাম ও হারেস হাসশাশের বাড়ি গুঁড়িয়ে দেয়।

প্রায় ৯ মাস আগে, ইসরায়েলি বাহিনী তাদের বাড়ি ঘিরে তাদেরকে হত্যা করে এবং বাড়ির একটি অংশ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি আগুন ধরিয়ে দেয়।

গত বছরের ৫ জুলাই শহীদ হন এই দুই ভাই। ইসরায়েলি বাহিনীর দাবি, তারা জেনিনে এক অভিযানে জড়িত ছিলেন, যেখানে সেনাদের হতাহতের ঘটনা ঘটে।

সহিংসতা অব্যাহত

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজায় যুদ্ধ শুরুর পর পশ্চিম তীরজুড়ে সহিংসতা বেড়েছে। বিশেষ করে পূর্ব জেরুজালেমে এই সহিংসতা আরও তীব্র হয়েছে।

ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে পশ্চিম তীরে ৯৪৮ জনের বেশি ফিলিস্তিনি শহীদ হয়েছেন। আহত হয়েছেন প্রায় সাত হাজার এবং আটক করা হয়েছে ১৬ হাজার ৪০০ জনকে।

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা