ইসরায়েলের নতুন সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির দায়িত্ব গ্রহণের পরপরই গাজার বিরুদ্ধে ব্যাপক সামরিক মহড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম ওয়ালা জানিয়েছে, তিনি হামাসের ওপর সামরিক চাপ বৃদ্ধি করে যুদ্ধের গতি আরও ত্বরান্বিত করতে চান।
আজ (বুধবার) আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীর (IDF) চিফ অফ স্টাফ হিসেবে দায়িত্ব নেন ইয়াল জামির। তিনি হের্তসি হালেভির স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন, যিনি ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের ‘তুফানুল আকসা’ অভিযানের পর ব্যর্থতার দায় নিয়ে পদত্যাগ করেন।
ওয়ালা-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন সেনাপ্রধান গাজার যুদ্ধনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে চান। তার পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে—
• বৃহৎ আকারের স্থল অভিযান
• গাজার কিছু অংশ দখলে রাখা
• আকাশ ও স্থল থেকে ব্যাপক গোলাবর্ষণ
• হামাসের ওপর চরম সামরিক চাপ সৃষ্টি
ইতোমধ্যেই ইসরায়েলি বাহিনী বিপুল পরিমাণ গোলাবারুদ, ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা সংগ্রহ করেছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ইসরায়েলের প্রতি সামরিক সহায়তা বৃদ্ধি পেয়েছে।
গাজায় সম্ভাব্য সামরিক অভিযানের কারণে মানবিক সংকটের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা গাজার সাধারণ নাগরিকদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র তৈরি এবং মানবিক করিডোর স্থাপনের পরিকল্পনা করছে। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, গাজার উচ্চ জনঘনত্বের কারণে ব্যাপক প্রাণহানির ঝুঁকি রয়েছে। এছাড়া, হামাসের হাতে আটক বন্দিদের জীবনও মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে।
ইসরায়েলের চ্যানেল ১২-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন সেনাপ্রধান দায়িত্ব গ্রহণের পর সেনাবাহিনীর উচ্চ পর্যায়ে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারেন। ৭ অক্টোবরের হামলায় ব্যর্থ সেনা কর্মকর্তাদের সরিয়ে দিয়ে বাহিনীর কাঠামোতে ব্যাপক সংস্কার আনার পরিকল্পনা রয়েছে।
ইসরায়েলি সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, হামাসকে বন্দি বিনিময় চুক্তিতে বাধ্য করাই নতুন সেনাপ্রধানের অন্যতম কৌশল। এ বিষয়ে কয়েক সপ্তাহ আগে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও শীর্ষ সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। বৈঠকে ইয়াল জামির জানান, তার নেতৃত্বে যুদ্ধ আরও আগ্রাসী হবে এবং হামাসের ওপর প্রবল সামরিক চাপ প্রয়োগ করা হবে।
গত শনিবার মধ্যরাতে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়। তবে ইসরায়েল এখনো দ্বিতীয় ধাপে যেতে রাজি হয়নি। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু চাইছেন, যত বেশি সম্ভব ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্ত করা হোক, তবে বিনিময়ে কোনো বড় ছাড় দেওয়া হবে না।
অন্যদিকে, হামাস এই অবস্থানের বিরোধিতা করে জানিয়েছে, ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতির সব শর্ত মানতে হবে।
সূত্র: আল জাজিরা