আগামীকাল বৃহস্পতিবার যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় চার ইসরায়েলি বন্দির কফিন ফেরত দেবে হামাস। এই ঘটনা ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর জন্য বড় রাজনৈতিক ও সামাজিক ধাক্কা হয়ে উঠতে পারে।
৭ অক্টোবর হামাসের ‘তুফানুল আকসা’ অভিযানের পর থেকে একের পর এক সংকটের মুখে পড়ছে ইসরায়েলি সমাজ। কিছুদিন আগেও বন্দি বিনিময়ের মাধ্যমে জীবিত ইসরায়েলিদের ফিরে পাওয়ার আনন্দ ছিল, কিন্তু এবার কফিন ফেরার দৃশ্য সেই উচ্ছ্বাসকে গভীর শোকে পরিণত করতে পারে।
ইসরায়েলে অনেকেই মনে করছেন, নেতানিয়াহুর সরকার জীবিত বন্দিদের ফেরানোর সুযোগ নষ্ট করেছে। বিষয়টি সামনে এলে তার প্রশাসনের ওপর চাপ আরও বেড়ে যাবে। এ কারণে কিছু ইসরায়েলি গণমাধ্যম, বিশেষ করে চ্যানেল ১২ ও সরকারি সম্প্রচার মাধ্যম, কফিন ফেরার দৃশ্য সরাসরি সম্প্রচার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এই ঘটনার প্রভাব ইসরায়েলি সমাজে মিলিত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। যারা বন্দি বিনিময়ের পক্ষে, তারা হতাশ হবে, আর যারা শক্ত অবস্থানের পক্ষে, তারা হয়তো আরও কঠোর প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ চাইবে।
যদি ইসরায়েলি গণমাধ্যম বিষয়টি এড়িয়ে যেতে চায়, তবে তা নেতানিয়াহুর জন্য কিছুটা স্বস্তির হতে পারে। এতে তার প্রশাসনের ব্যর্থতা কিছুটা আড়ালে থাকবে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিস্তারের কারণে ঘটনাটি পুরোপুরি গোপন রাখা প্রায় অসম্ভব।
হামাস এই কফিন ফেরানোর ঘটনাকে ইসরায়েলি সমাজের ওপর মানসিক চাপ বাড়ানোর কৌশল হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। অতীতে ইসরায়েল গাজা থেকে গোপনে লাশ উদ্ধার করেছিল, কিন্তু এবার পুরো পরিস্থিতি হামাসের নিয়ন্ত্রণে। ফলে ইসরায়েলের পক্ষে ঘটনাটি নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হবে।
এই ঘটনা ইসরায়েলি জনগণের মনে নেতানিয়াহুর নেতৃত্বের ব্যর্থতা আরও গভীরভাবে তুলে ধরতে পারে। ৭ অক্টোবরের হামলার মতোই, এটি ইসরায়েলের ‘অপরাজেয়’ ভাবমূর্তিতে আরেকটি বড় আঘাত হানতে পারে।
যুদ্ধের মধ্যে ইসরায়েল কয়েকবার বিজয়ের উল্লাস করেছে, বিশেষ করে হামাস ও হিজবুল্লাহর নেতাদের হত্যার পর। কিন্তু বন্দিদের কফিন ফেরার দৃশ্য সেই বিজয়ের অনুভূতিতে মারাত্মক ধাক্কা দেবে।
এ ছাড়া, বন্দি বিনিময় চুক্তির আরও ধাপ এখনো বাকি। ভবিষ্যতে আরও কফিন ফেরত আসার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে ইসরায়েলি সমাজে নেতানিয়াহুর অবস্থান আরও দুর্বল হতে পারে, যা দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।
সূত্র: আল আরবি আল জাদিদ