মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

পশ্চিমাদের সহযোগিতায় ৭৫ % ফিলিস্তিনিকে শহিদ করা হয়েছে এআই দিয়ে

পশ্চিমাদের সহযোগিতায় ৭৫ % ফিলিস্তিনিকে শহিদ করা হয়েছে এআই দিয়ে
পশ্চিমাদের সহযোগিতায় ৭৫ % ফিলিস্তিনিকে শহিদ করা হয়েছে এআই দিয়ে। ছবি : কুদস নেটওয়ার্ক

উন্নত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টেকনোলজির মাধ্যমে দখলদার ইসরায়েলকে সহায়তা করছে একাধিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান।

ফিলিস্তিনিদের ব্যক্তিগত তথ্য অ্যালগরিদমে যুক্ত করে তাঁদের সামরিক লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। এসব তথ্যের ভিত্তিতে চালানো হচ্ছে ড্রোন হামলা ও নিশানাভিত্তিক হত্যাকাণ্ড।

মেটা তাদের অ্যালগরিদমের মাধ্যমে ফিলিস্তিনপন্থী কনটেন্টে রিচ কমিয়ে দিচ্ছে। অন্যদিকে ইসরায়েলপন্থী বক্তব্য প্রোমোট করছে।

‘ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কাছে কোনো তথ্য পৌঁছালেই সেটিকে সামরিক লক্ষ্য হিসেবে চিহ্নিত করে হামলা চালানো হচ্ছে—যদিও বাস্তবে অনেক ক্ষেত্রেই তা বেসামরিক স্থাপনা। তেল আবিব বলছে, তারা স্বয়ংক্রিয় নির্দেশনা অনুযায়ী নজরদারি করে হামলা চালাচ্ছে।

ক্লাউড স্টোরেজ

ক্লাউড স্টোরেজ একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা দখলদার বাহিনী বড় পরিমাণে ডিজিটাল তথ্য সংরক্ষণ করতে ব্যবহার করছে। এসব স্টোরেজে এমন অ্যাপ্লিকেশন অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা হামলা ও বিস্ফোরণের লক্ষ্য নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। এই প্রযুক্তি গাজা এবং পশ্চিম তীরের সরাসরি দৃশ্য দেখিয়ে দূর থেকে গুলি চালানো এবং নিয়ন্ত্রণ সহজ করে তোলে।

এমন সেবা প্রদান করছে প্রধান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো, যেমন মাইক্রোসফট, গুগল এবং অ্যামাজন।

এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সরঞ্জামগুলো মূলত সামরিক পরিকল্পনা এবং লক্ষ্য নির্ধারণে ব্যবহৃত হচ্ছে, যা গাজার ওপর হামলার কার্যক্রমকে আরও নিখুঁত ও লক্ষ্যভিত্তিক করে তোলে।

‘Where’s Daddy’ নামের একটি টুল যা ফিলিস্তিনি পরিবারগুলির বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে এবং তাদের অবস্থান চিহ্নিত করে।

এই টুলের মাধ্যমে, নির্ধারিত ব্যক্তির অবস্থান জানতে পরিবারের সদস্যদের হুমকি দেওয়া বা জবরদস্তি করে তথ্য আদায় করা হয়। এটি ব্যক্তির গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য পেতেও ব্যবহৃত হয়।

এটি নির্ধারিত ব্যক্তির যোগাযোগের একটি স্পষ্ট চিত্র তৈরি করে, যা তাকে ট্র্যাক করতে সাহায্য করে। এই টুল দ্বারা সংগ্রহ করা ডেটা টার্গেটেড অপারেশনের জন্য ব্যবহার করা হয়।

দ্য গসপেল

এই টুলটি বিভিন্ন ভবন ও স্থাপনা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তালিকা তৈরি করে।

এরপর এটি টার্গেটকৃত স্থান, আকার এবং কৌশলগত গুরুত্ব অনুসারে ভাগ করে। যেমন স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল ইত্যাদি।

এছাড়া, এটি স্যাটেলাইট চিত্র এবং ড্রোনের সাহায্যে অবস্থান সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে ব্যবহৃত হয়।

এটি সামরিক পরিকল্পনা গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ব্যাপক প্রভাব সৃষ্টি করে আবাসিক এলাকা লক্ষ্য করে হামলার জন্য। অথচ টুলটি ডিজাইন করা হয়েছে বেসামরিক ক্ষতি কমানোর লক্ষ্যে।

ল্যাভেন্ডার

‘ল্যাভেন্ডার’ এমন টুল, যা ফোনকল, বার্তা, অবস্থান এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে বিপুল পরিমাণ তথ্য সংগ্রহ করে।

এই তথ্যের ভিত্তিতে কে কতটা সন্দেহজনক তা নির্ধারণ করা হয়। তাদের প্রতিরোধ আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা থাকার আশঙ্কা অনুযায়ী ভাগ করা হয়।

চলাফেরা ও যোগাযোগের ধরন বিশ্লেষণ করে সন্দেহজনক কর্মকাণ্ড চিহ্নিত করা হয়।

এসব বিশ্লেষণের ভিত্তিতে কারও উপর হামলা করা হবে, না কি তাকে গ্রেপ্তার করা হবে—সে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তর নজরে রাখতে ফোন ট্র্যাকিং প্রযুক্তি ব্যবহার করছে ইসরায়েল। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে মোবাইল ফোন থেকে অবস্থানসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা হয়, যাতে ব্যক্তিদের চলাচল পর্যবেক্ষণ করা যায়।

ফোনকল বিশ্লেষণের মাধ্যমে বোঝার চেষ্টা করা হয়—কে কোথায় যাচ্ছে বা স্থানত্যাগ নিয়ে কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে মানুষের গতি ও গতিপথ বিশ্লেষণ করা হয়।

এর ফলে ফিলিস্তিনিদের অবস্থান ও চলাচলের কেন্দ্রগুলো চিহ্নিত করা সম্ভব হয় এবং সেসব এলাকায় চালানো হয় জোরপূর্বক উচ্ছেদ অভিযান।

ডিজিটাল কোম্পানিগুলোর সাথে দখলদার বাহিনীর সম্পর্কটি মূলত বাণিজ্যিক স্বার্থে গড়ে উঠেছে, যা মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ডে সহায়তা করছে বলে মত দিয়েছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা