মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

সিরিয়ার স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে দেব না : এরদোয়ান

সিরিয়ার স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে দেব না : এরদোয়ান
সিরিয়ার স্থিতিশীলতা নষ্ট হতে দেব না : এরদোয়ান। ছবি : আল জাজিরা

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোয়ান বলেছেন, তার দেশ সিরিয়ায় অস্থিরতা তৈরি হতে দেবে না। তিনি জানান, সিরিয়ার নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা তুরস্কের নিরাপত্তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

শুক্রবার আন্তালিয়া কূটনৈতিক ফোরামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এরদোয়ান বলেন, সিরিয়ার ভৌগোলিক একতা রক্ষায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে একমত। একইসঙ্গে তিনি ইসরায়েলের সমালোচনা করে বলেন, সিরিয়া ও লেবাননে আক্রমণ চালিয়ে ইসরায়েল এই অঞ্চলে ইসলামিক স্টেট (আইএস) বিরোধী লড়াইকে বাধাগ্রস্ত করছে।

এরদোয়ান জানান, গত ৮ ডিসেম্বর আসাদ সরকার পতনের পর সিরিয়ায় একটি স্থায়ী শান্তির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যা নষ্ট হতে দেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, “ইসরায়েল জাতিগত ও ধর্মীয় বিভেদ উসকে দিয়ে এবং সংখ্যালঘুদের উত্তেজিত করে সিরিয়ার বিপ্লবকে ব্যর্থ করতে চায়।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা সিরিয়াকে নতুন করে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিতে দেব না।” এরদোয়ানের ভাষায়, “সিরিয়ার জনগণ দমন-পীড়ন, যুদ্ধ আর দুর্ভোগে ক্লান্ত।”

ফোরামের ফাঁকে এরদোয়ান সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমাদ আশ শারা’র সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন। তুর্কি প্রেসিডেন্টের দপ্তর জানায়, বৈঠকে এরদোয়ান স্পষ্ট করে জানিয়েছেন—সিরিয়ায় অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা কোনোভাবেই সফল হতে দেওয়া হবে না।

তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, সামনের বছরগুলোতে সিরিয়ায় স্থিতিশীলতা, শান্তি ও উন্নয়ন ফিরে আসবে। একইসঙ্গে সিরিয়ার ওপর আরোপিত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে তুরস্ক কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে।

শারা’ শুক্রবার ফোরামে অংশ নিতে তুরস্কে পৌঁছান। এটি তার দ্বিতীয় সফর। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে তিনি আঙ্কারায় গিয়ে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

এর আগের দিন বৃহস্পতিবার, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে সিরিয়া ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ হস্তক্ষেপ এবং পানি সম্পদ চুরির অভিযোগ এনে কড়া প্রতিবাদ জানায়।

জাতিসংঘে সিরিয়ার স্থায়ী প্রতিনিধি কুসাই আল-দাহাক বলেন, “দামেস্ক আবারও জোর দিয়ে বলছে—পুরো ভূখণ্ডে সে নিজের সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায় এবং ইসরায়েলের হস্তক্ষেপ কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।”

তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসনের নিন্দা জানাতে এবং এসব হামলা অবিলম্বে বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানান।

গত মার্চ মাসে ইসরায়েল সিরিয়ার পাঁচটি প্রদেশে প্রায় ৮০টি বিমান হামলা চালায়। এসব হামলায় বিভিন্ন সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়। হামলার সংখ্যা ও বিভিন্ন জায়গায় লক্ষ্যবস্তুর বিস্তৃতি ইঙ্গিত দেয় যে, ইসরায়েল এই অঞ্চলে উত্তেজনা বাড়াতে চায়। সবচেয়ে বেশি হামলা হয়েছে হোমস ও দামেস্কের আশপাশের এলাকায়।

এ ছাড়া, গোলান মালভূমির দখলকৃত অংশ সংলগ্ন নিরাপত্তা অঞ্চলে স্থাপিত সামরিক চৌকি থেকে ইসরায়েলি বাহিনী প্রায়ই দক্ষিণ সিরিয়ার কুনেইত্রা ও দারআ প্রদেশের গ্রামীণ এলাকাগুলোতে ঢুকে পড়ে। অস্ত্র খোঁজার অজুহাতে এসব এলাকায় তারা অভিযান চালায়।

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা