ভারতের সঙ্গে চলমান সীমান্ত উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে নতুন করে স্বল্প-পাল্লার একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে পাকিস্তান। শনিবার দেশটির সামরিক বাহিনী সফলভাবে উৎক্ষেপণ করেছে মাটি থেকে মাটিতে নিক্ষেপযোগ্য ‘আব্দালি’ ক্ষেপণাস্ত্র।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিবৃতিতে জানায়, ‘আব্দালি’ ক্ষেপণাস্ত্রের সর্বোচ্চ পাল্লা ৪৫০ কিলোমিটার। এতে রয়েছে উন্নত ন্যাভিগেশন প্রযুক্তি ও ম্যানুভারিং সক্ষমতা। এই উৎক্ষেপণের লক্ষ্য ছিল সেনাসদস্যদের যুদ্ধকালীন প্রস্তুতির মান যাচাই ও ক্ষেপণাস্ত্রটির কারিগরি সক্ষমতা নিশ্চিত করা।
এর আগে ২২ এপ্রিল ভারত-দখলকৃত কাশ্মীরে এক প্রাণঘাতী হামলার পর নতুন করে চড়া হয়েছে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা। ওই হামলায় অন্তত ২৬ জন নিহত হয়। যদিও কোনো গোষ্ঠী এখনো হামলার দায় স্বীকার করেনি, তবে নয়াদিল্লি এ ঘটনার জন্য সরাসরি ইসলামাবাদকে দায়ী করেছে। পাকিস্তান এসব অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং পাল্টা দাবি করেছে, হামলার নেপথ্যে ভারতেরই হাত রয়েছে—রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলেই তারা এ হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে ইসলামাবাদ।
উত্তেজনার অংশ হিসেবে কাশ্মীর সীমান্তে নিয়মিত গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে। শনিবার ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়, টানা অষ্টম রাত পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষীরা হালকা অস্ত্র দিয়ে গুলি চালালে তারা পাল্টা জবাব দিয়েছে।
কাশ্মীরের পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত অংশে শুক্রবার স্থানীয় প্রশাসন কয়েকটি জেলায় জনগণকে আগামী দুই মাসের জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য মজুত রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এতে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা আরও স্পষ্ট হয়েছে।
এ ঘটনায় দুই দেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপও লক্ষ্য করা গেছে। ভারত ঐতিহাসিক সিন্দু নদীর পানি বণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে, জবাবে পাকিস্তান ভারতের বেসামরিক বিমান চলাচলের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করে দেয়। পরে ভারতও একই ধরনের পদক্ষেপ নেয়।
এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে মধ্যস্থতার উদ্যোগ নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও আলাদাভাবে টেলিফোনে কথা বলেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বিবৃতি অনুযায়ী, রুবিও ভারতকে জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন এবং পাকিস্তানকে কাশ্মীর হামলার তদন্তে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন।
সূত্র: আল জাজিরা
