মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

গাজায় হামাসের নিরস্ত্রীকরণ প্রস্তাব ঘিরে বিতর্ক, সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া

হামাস
গাজায় হামাসের নিরস্ত্রীকরণ প্রস্তাব ঘিরে বিতর্ক, সোশ্যাল মিডিয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া। ছবি আল জাজিরা

ইসরায়েলের সঙ্গে চলমান সংঘাত থামাতে হামাসকে নিয়ে মধ্যস্থতাকারীরা একটি নতুন প্রস্তাব দিয়েছেন, যেখানে গাজার প্রতিরোধ বাহিনীর নিরস্ত্রীকরণের শর্ত দেওয়া হয়েছে। এ প্রস্তাব সামনে আসতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া।

প্রস্তাব অনুযায়ী, চুক্তির প্রথম সপ্তাহে হামাসকে ইসরায়েলের আটক অর্ধেক বেসামরিক নাগরিককে মুক্তি দিতে হবে। এর বিনিময়ে গাজায় ৪৫ দিনের জন্য অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে, যাতে মানবিক সহায়তা—খাদ্য, ওষুধ ও আশ্রয়সামগ্রী—প্রবেশ করতে পারে।

এই ৪৫ দিনের শেষ নাগাদ বাকি জীবিত ও মৃত বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। তারপরই যুদ্ধবিরতির সময়সীমা বাড়ানো ও আরও সহায়তা পাঠানোর বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।

তবে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো—এই প্রস্তাবে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, গাজার প্রতিরোধ বাহিনীকে নিরস্ত্রীকরণ করতেই হবে। মিশরীয় মধ্যস্থতাকারীরা সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, নিরস্ত্রীকরণ প্রশ্নে আলোচনা না হলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়ন হবে না।

এই প্রস্তাব প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নানামুখী প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন—গাজার হাতে এমন কী শক্তি আছে, যা ইসরায়েলকে এতটা শঙ্কিত করে তোলে?

সমালোচকদের মতে, গাজার প্রতিরোধ বাহিনীর কাছে নেই কোনো যুদ্ধবিমান, ট্যাংক, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কিংবা উন্নত ড্রোন। স্থানীয়ভাবে তৈরি আইইডি, আরপিজি এবং ‘ইয়াসিন-১০৫’ ও ‘গোল’ নামের ক্ষেপণাস্ত্রই তাদের অস্ত্রভাণ্ডারের মূল উপকরণ।

অনেকের দাবি, এই নিরস্ত্রীকরণ প্রস্তাব আদতে যুদ্ধ বন্ধের পরিকল্পনার চেয়ে যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করার কৌশল। কারও মতে, এটি শুধু অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা নয়, বরং ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধের মনোবল ভেঙে দেওয়ার এক চাল।

অনেকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের কথা স্মরণ করে বলেছেন—সেদিন ফিলিস্তিনিরা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ‘অজেয়’ ভাবমূর্তি চূর্ণ করেছিল, আর তা হয়েছিল উন্নত অস্ত্র নয়, বরং অসীম সাহস ও কৌশলের মাধ্যমে।

আরও একাংশের অভিমত, গাজার হালকা অস্ত্র ফিলিস্তিনিদের আত্মরক্ষা করেছে। এসব অস্ত্রই বসতকারীদের জমি দখল, বাড়িঘরে আগুন দেওয়া কিংবা পশুদের বিষ দেওয়ার মতো অপরাধ থেকে কিছুটা হলেও বিরত রেখেছে।

তাঁদের মতে, এই অস্ত্র শুধু প্রতিরক্ষা নয়—এটি ফিলিস্তিনিদের আত্মমর্যাদা, স্বাধীনতা এবং প্রতিরোধের প্রতীক। নিরস্ত্রীকরণের নামে সেই প্রতীককে নিশ্চিহ্ন করে দিতে চাইছে আন্তর্জাতিক চাপ।

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা