দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি কৌশলগত টিলায় স্থায়ীভাবে সেনা মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যেও পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহার না করে, অনির্দিষ্টকালের জন্য এসব এলাকায় অবস্থান বজায় রাখার পরিকল্পনা করেছে তারা।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, এই সামরিক অবস্থান ‘নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও ইসরায়েলিদের রক্ষার’ জন্য নেওয়া হয়েছে। তবে লেবানন এই পদক্ষেপকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির লঙ্ঘন হিসেবে দেখছে।
১৮ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ লেবানন থেকে সেনা প্রত্যাহারের নির্ধারিত সময়সীমা শেষ হওয়ার কথা। তবে তার আগেই ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা পাঁচটি কৌশলগত স্থানে স্বল্পসংখ্যক সেনা রেখে যাবে। এসব স্থান হলো— আবিদা পাহাড়, জাবাল ব্লাত, লাবুনেহ পাহাড়, আজ্জিয়াহ পাহাড় এবং হামামেস পাহাড়।
ইসরায়েল ইতোমধ্যে এসব এলাকায় নতুন সামরিক স্থাপনা তৈরি করেছে এবং নজরদারি ব্যবস্থা জোরদার করেছে। নতুন সামরিক ঘাঁটি স্থাপন, বাড়তি ক্যামেরা, রাডার ও পর্যবেক্ষক নিয়োগসহ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, তাদের বাহিনী লেবাননের জনবসতিপূর্ণ এলাকায় প্রবেশ করবে না। তবে তারা দখলকৃত অঞ্চলে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী করেছে। যুদ্ধ শুরুর আগে যে পরিমাণ সেনা মোতায়েন ছিল, বর্তমানে তার তিনগুণ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে।
লেবাননের রাষ্ট্রপতি জোসেফ আউন জানিয়েছেন, লেবানন ইসরায়েলকে যুদ্ধবিরতি মানতে বাধ্য করতে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে সেনা প্রত্যাহার ও বন্দিদের ফেরানোর বিষয়েও তারা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আলোচনা চালাচ্ছে।
হিজবুল্লাহর মহাসচিব শাইখ নাঈম কাসেম বলেন, ‘দখলদার বাহিনীর থাকার কোনো যৌক্তিকতা নেই। লেবানন সরকারের উচিত এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেওয়া।’
এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ইসরায়েল ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পাঁচটি স্থানে সেনা রাখার অনুমতি চেয়েছে। তবে লেবাননের কড়া অবস্থান ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েল শেষ পর্যন্ত সেনা প্রত্যাহার করবে কি না, তা অনিশ্চিত রয়ে গেছে।
ইসরায়েলের এই সিদ্ধান্ত লেবানন ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগের পাশাপাশি, এই পদক্ষেপ ভবিষ্যতে আরও উত্তেজনার সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সূত্র : আল মায়াদিন