মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি আলোচনায় আগ্রহী সিরিয়া, ফ্রান্সের সমর্থন প্রত্যাশা

প্যারিসে এলিসি প্রাসাদে অনুষ্ঠিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মুখোমুখি হলেন সিরিয়ার অন্তর্বর্তী সরকারপ্রধান আহমদ আশ-শারা এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। বৈঠক শেষে তারা সিরিয়া-ইসরায়েল সম্পর্ক, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা, যুদ্ধাপরাধ তদন্ত এবং আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুগুলো তুলে ধরেন।

আহমদ আশ-শারা জানান, ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বর্তমানে কিছু পরোক্ষ আলোচনা চলছে, যা তৃতীয় পক্ষের মধ্যস্থতায় এগোচ্ছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এমন দেশগুলোর সঙ্গে সংলাপে আছি, যাদের ইসরায়েলের ওপর যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। লক্ষ্য—সহিংসতা থামিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা।’

সিরিয়ার পক্ষ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়, দেশটির ভূখণ্ডে অবস্থানরত বিদেশি যোদ্ধারা আইন মেনেই চলবে এবং সিরিয়ার নিরাপত্তায় বিঘ্ন ঘটাবে না। শারা বলেন, ‘নতুন সংবিধানে বিদেশি যোদ্ধা ও তাদের পরিবারের নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হবে।’ তিনি আরও জানান, সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক সহিংসতা তদন্তাধীন এবং দায়ীদের আইনের আওতায় আনা হবে।

ফরাসি প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘আমরা আশাবাদী, সিরিয়া ও ইসরায়েলের মধ্যে সরাসরি শান্তি আলোচনা শুরু হবে। আহমদ আশ-শারা তাতে অংশ নিতে প্রস্তুত।’ তিনি যুক্তরাষ্ট্রকে সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার বিলম্বিত করতে অনুরোধ জানান, কারণ ‘দায়েশ’ (আইএস) এখনও বাস্তব হুমকি হিসেবে রয়ে গেছে।

ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘সিরিয়ার স্থিতিশীলতা পুরো মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সন্ত্রাসবিরোধী লড়াই ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তুলতে আমরা সিরিয়ার পাশে থাকতে চাই।’ তিনি জানান, সিরিয়ার ওপর থাকা ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞাগুলো ধাপে ধাপে তুলে নেওয়ার পক্ষে ফ্রান্স এবং এ প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রকেও অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ চলছে।

গণহত্যার ঘটনায় কেউ যেন আইনের হাত এড়িয়ে না যায়, সেটি নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট। তিনি সিরিয়া সরকার ও সিরিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সের মধ্যে সম্প্রতি হওয়া চুক্তিকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি বলে মন্তব্য করেন। একইসঙ্গে সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র পুরোপুরি বিলুপ্ত করারও আহ্বান জানান তিনি।

লেবানন-সিরিয়া সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা চললে ফ্রান্স তাতে মধ্যস্থতা করতে প্রস্তুত।’

এই উচ্চ পর্যায়ের বৈঠককে সিরিয়া-ফ্রান্স সম্পর্ক পুনর্গঠনের একটি তাৎপর্যপূর্ণ ধাপ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকেরা। তাঁদের মতে, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সিরিয়ার পুনর্গঠন ও স্থায়ী শান্তির পথে এটি একটি আশাব্যঞ্জক অগ্রগতি।

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা