দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে চার ফিলিস্তিনি শহিদ হয়েছেন। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে গতকাল শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো। নাবলুস ও তুলকার্ম শহরে চালানো এই হামলায় শহিদদের মধ্যে তিনজনের মরদেহ এখনো ইসরায়েলি বাহিনীর হেফাজতে রয়েছে। একই দিনে ইসরায়েলি বসতকারীদের হামলায় আরও ১৬ ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, গত বুধবার ইসরায়েলি বাহিনী তুলকার্ম শহরের নূর শামস শরণার্থী শিবিরে অভিযান চালিয়ে তিন ফিলিস্তিনিকে গুলি করে শহিদ করে। নিহতরা হলেন— জিহাদ মাহমুদ হাসান মাশারকা, খালেদ মুস্তফা শরীফ আমের এবং মুহাম্মদ গাসসান আবু আবেদ। ইসরায়েলি বাহিনী তাদের মরদেহ আটকে রেখেছে।
শুক্রবার রাতে ফিলিস্তিনি বেসামরিক সংস্থার মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নিশ্চিত করে, তিনজনকে বুধবারই হত্যা করা হয়েছিল।
এদিকে, নাবলুসের আসকার শরণার্থী শিবিরের কাছে ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে ১৯ বছর বয়সী আদেল আহমেদ আদেল বাশকার শহিদ হয়েছেন। ফিলিস্তিনি বার্তা সংস্থা ‘ওয়াফা’ জানিয়েছে, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
গত ২১ জানুয়ারি থেকে দখলকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন, তুবাস ও তুলকার্ম শহর ও শরণার্থী শিবিরগুলোতে ইসরায়েলি বাহিনী সামরিক অভিযান চালাচ্ছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার রাত পর্যন্ত এই অভিযানে ৫৯ জন ফিলিস্তিনি শহিদ হয়েছেন।
পশ্চিম তীরের দক্ষিণে বেথলেহেমের পূর্বে আল-মিন্যার গ্রামে ইসরায়েলি বসতকারীদের হামলায় আহত হয়েছেন ১৬ ফিলিস্তিনি। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট জানিয়েছে, আহতদের মধ্যে ছয়জনের হাড় ভেঙে গেছে, ছয়জন মারধরের শিকার হয়েছেন এবং চারজন টিয়ার গ্যাসের ধোঁয়ায় শ্বাসকষ্টে ভুগছেন।
গ্রামের কাউন্সিল প্রধান জায়েদ কাওয়াজবেহ জানান, প্রায় ৫৫ জন ইসরায়েলি বসতকারী, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন অস্ত্রধারী ছিল, ফিলিস্তিনিদের ওপর লাঠি ও বন্দুকের বাঁট দিয়ে হামলা চালায় এবং টিয়ার গ্যাস ছুড়ে মারে। এই হামলায় তিনটি গাড়ি ও চারটি সোলার প্যানেল ধ্বংস করা হয়।
তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা ‘হিলটপ ইয়ুথ’ নামের উগ্র বসতকারীদের একটি গোষ্ঠীর সদস্য, যারা ইতোমধ্যেই ওই এলাকায় একটি অবৈধ বসতি স্থাপন করেছে।
পশ্চিম তীরের দক্ষিণে মাসাফের ইয়াত্তা এলাকায় ইসরায়েলি বসতকারীরা চারণভূমিতে বিষ প্রয়োগ করলে অন্তত ২৬টি ভেড়া মারা যায়। গ্রামের কাউন্সিল প্রধান ফরিদ বারকান জানান, বসতকারীরা এর আগেও চারণভূমি দখলের চেষ্টা করেছিল এবং সেখানে গাছ রোপণ করেছিল। সম্প্রতি তারা পানির কূপেও বিষ প্রয়োগ করেছে।
গাজায় হামলা শুরুর পর থেকে ইসরায়েল দখলকৃত পশ্চিম তীরে দমন-পীড়ন বাড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত ৯১৬ জন ফিলিস্তিনি শহিদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন প্রায় ৭,০০০ জন এবং আটক হয়েছেন ১৪,৫০০ জন।
সূত্র: টিআরটি অ্যারাবিক
