গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির প্রথম ধাপের অংশ হিসেবে আজ শনিবার তিনজন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিতে যাচ্ছে হামাস। এ বিনিময়ে ইসরায়েল ৩৬৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেবে।
শুক্রবার এক বিবৃতিতে হামাসের সামরিক শাখা কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবাইদা জানান, ‘তুফানুল আকসা বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায়’ সাশা আলেক্সান্ডার ত্রুপানোভ, সাগি ডিকেল হান ও ইয়াইর হর্নকে মুক্তি দেওয়া হবে।
এর আগে ইসলামী জিহাদের সামরিক শাখা সারায়া আল-কুদস জানিয়েছিল, ষষ্ঠ ধাপের বন্দি বিনিময়ের অংশ হিসেবে রুশ-ইসরায়েলি নাগরিক আলেক্সান্ডার ত্রুপানোভকে মুক্তি দেওয়া হবে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, হামাসের পাঠানো বন্দিদের তালিকা কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় পাওয়া গেছে। ইসরায়েলি সরকার এই তালিকা অনুমোদন করেছে এবং বন্দিদের পরিবারের সম্মতিতে এটি প্রকাশ করা হয়েছে।
ইসরায়েলের দৈনিক পত্রিকা ইয়েদিয়থ আহরনোথ জানিয়েছে, সাগি ডিকেল হান, যিনি মার্কিন নাগরিক, এবং ইয়াইর হর্নকে শনিবার মুক্তি দেওয়া হবে। মারিভ পত্রিকার তথ্য অনুযায়ী, আলেক্সান্ডার ত্রুপানোভ রুশ নাগরিক এবং এর আগে মস্কো তার মুক্তি দাবি করেছিল।
গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের পরিবারের সংগঠন এ ঘোষণাকে ‘খুশির খবর’ হিসেবে উল্লেখ করেছে এবং দ্রুত ও সম্পূর্ণ বন্দি বিনিময়ের আহ্বান জানিয়েছে।
হামাসের বন্দি বিষয়ক দপ্তর জানিয়েছে, শনিবার ৩৬৯ জন ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হবে। এদের মধ্যে ৩৬ জন যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত এবং ৩৩৩ জনকে ৭ অক্টোবরের পর গাজা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
হামাস জানিয়েছে, নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী বন্দি বিনিময়ের অঙ্গীকার রক্ষা করা হবে এবং চুক্তি বাস্তবায়নে কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতাকারীরা ইতিবাচক ভূমিকা রেখেছে।
তবে হামাসের অভিযোগ, চুক্তির চারটি শর্ত লঙ্ঘন করেছে ইসরায়েল। এ শর্তগুলো হলো—ফিলিস্তিনিদের হত্যাকাণ্ড, গাজার উত্তরে বাস্তুচ্যুতদের প্রত্যাবর্তনে বাধা, আশ্রয়ের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সরবরাহে ব্যাঘাত এবং ওষুধ ও হাসপাতাল সংস্কারের উপকরণ প্রবেশে বিলম্ব।
জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় অফিস জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গাজায় ৭৬৩টি ত্রাণবাহী ট্রাক প্রবেশ করেছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তির আওতায় তিনটি ধাপ রয়েছে, যার প্রতিটি ধাপ ৪২ দিন ধরে চলবে। প্রথম ধাপে ৩৩ জন ইসরায়েলি বন্দিকে পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়া হবে।
এ পর্যন্ত হামাস পাঁচটি ধাপে ১৬ জন ইসরায়েলি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে।
সূত্র: আল-জাজিরা ও বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা
