ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু দুর্নীতির অভিযোগে তেল আবিবের কেন্দ্রীয় আদালতে আবারও হাজির হয়েছেন। সোমবার আদালতে উপস্থিত হয়ে এসব অভিযোগের বিষয়ে জবাব দেন তিনি। ২০২৪ সালের ১০ ডিসেম্বর থেকে এ নিয়ে সপ্তমবার আদালতে হাজিরা দিলেন নেতানিয়াহু।
সোমবার সকালে ইসরায়েলি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো নেতানিয়াহুর আদালতে প্রবেশের একটি ভিডিও প্রকাশ করে। ভিডিওতে দেখা যায়, তিনি তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক জাভি বারকোভিচের সঙ্গে আদালতে প্রবেশ করছেন।
গত বছরের ডিসেম্বরের শেষদিকে নেতানিয়াহুর প্রোস্টেট অপসারণের অস্ত্রোপচার হয়। এরপর থেকে তিনি শারীরিক অসুস্থতার কারণে বেশ কিছুদিন আদালতে হাজির হতে পারেননি। শুক্রবার তিনি শারীরিক অবস্থার কথা উল্লেখ করে আদালতে হাজিরা পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেছিলেন। তবে আদালত তার আবেদন নাকচ করে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম চ্যানেল ১২ জানায়, নেতানিয়াহুর আইনজীবীরা প্রতি সপ্তাহে একটি করে সেশন করার প্রস্তাব দিলেও বিচারকরা তা প্রত্যাখ্যান করেন। পরে তেল আবিবের একটি নিরাপদ আদালত কক্ষে শুনানি শুরু হয়। নেতানিয়াহুর নিরাপত্তাজনিত কারণে এটি জেরুজালেম আদালতের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
আদালতে নেতানিয়াহু বলেন, প্রায় এক মাস আগে আমার অস্ত্রোপচার হয়েছে। তবে চিকিৎসকদের প্রত্যাশা অনুযায়ী এখনও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারিনি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সংসদে দীর্ঘ সময় কাজ করতে হচ্ছে এবং বিভিন্ন জাতীয় ইস্যুতে ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। ফলে বিশ্রামের সুযোগ পাইনি। তবে আমি সেরে উঠছি।
নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে তিনটি দুর্নীতির মামলা রয়েছে, যেগুলো ফাইল ১০০০, ফাইল ২০০০ এবং ফাইল ৪০০০ নামে পরিচিত। ইসরায়েলের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল আভিচাই মান্ডেলব্লিট ২০১৯ সালের নভেম্বর মাসে এসব মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
ফাইল ১০০০ মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, নেতানিয়াহু ও তার পরিবার ধনী ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মূল্যবান উপহার গ্রহণ করেছেন এবং এর বিনিময়ে তাদের নানা সুবিধা দিয়েছেন। ফাইল ২০০০ মামলায় তার বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে, তিনি ‘ইদিয়থ আহারোনোথ’ পত্রিকার প্রকাশক আর্নন মোজেসের সঙ্গে ইতিবাচক সংবাদ কভারেজের বিনিময়ে একটি চুক্তি করেছিলেন।
সবচেয়ে জটিল ফাইল ৪০০০ মামলায় অভিযোগ রয়েছে, নেতানিয়াহু ‘ওয়াল্লা’ নিউজ ওয়েবসাইটের সাবেক মালিক শাউল এলোভিচ ও টেলিকম প্রতিষ্ঠান ‘বেজেক’কে বিশেষ সুবিধা দিয়েছেন। এর বিনিময়ে তারা নেতানিয়াহুর পক্ষে ইতিবাচক সংবাদ প্রচার করেছিল।
২০২০ সালে শুরু হওয়া এসব মামলার বিচারকাজ এখনো চলমান। নেতানিয়াহু বরাবরই এসব অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেছেন, এটি তাকে ক্ষমতাচ্যুত করার উদ্দেশ্যে চালানো রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র।
সূত্র : আনাদোলু
