সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইসরায়েল সীমান্তবর্তী অঞ্চলে সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে। পাশাপাশি কৌশলগত এলাকাগুলোতে নিজেদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা চালাচ্ছে। রবিবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সিরিয়ার জাবাল আল-শেইখ এলাকা দখল করে ছবি প্রকাশ করে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মুখপাত্র অবিখাই আদ্রি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও প্রতিরক্ষামূলক অবস্থান সুরক্ষিত করতেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এতে গোলান মালভূমির বাসিন্দা ও ইসরায়েলের নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।’ তবে তিনি দাবি করেন, ইসরায়েলি বাহিনী সিরিয়ার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে না।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম মাআরিভ জানিয়েছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গোলান সীমান্ত পেরিয়ে সিরিয়ার জাবাল আল-শেইখ সামরিক ঘাঁটি দখল করেছে। দীর্ঘ ৫০ বছর পর এই প্রথম ইসরায়েল গোলান মালভূমি থেকে সিরিয়ার ভেতরে ১৪ কিলোমিটার অগ্রসর হলো।
ইসরায়েল দখলকৃত অঞ্চলে বাফার জোন তৈরির পরিকল্পনা করছে। দেশটি বলছে, এটি স্থায়ী দখল নয়। বরং দখলকৃত অংশের নিরাপত্তা জোরদার করতেই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জাবাল আল-শেইখ দখল ইসরায়েলের জন্য কৌশলগত দিক থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই এলাকা থেকে সিরিয়ার রাজধানী দামেশকের ওপর নজরদারি চালানো সম্ভব। এছাড়া ‘দাউদের করিডর’ নামে একটি অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা করিডর তৈরির পরিকল্পনা করছে ইসরায়েল। এই করিডর ইরান ও তুরস্কের প্রভাব প্রতিরোধে সহায়ক হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসরায়েলি বাহিনী ইতোমধ্যে সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র গবেষণা কেন্দ্র ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনাগুলো ধ্বংস করেছে। এছাড়া হিজবুল্লাহর সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে সন্দেহ হওয়ায় একটি বহরেও হামলা চালিয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ১৯৭৪ সালের অস্ত্রবিরতি চুক্তি কার্যত বাতিল হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, দখলকৃত ভূখণ্ডে শত্রুপক্ষকে স্থায়ী হতে দেওয়া হবে না। তবে ইসরায়েলের এই পদক্ষেপ মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতা আরও বাড়িয়েছে।
ইসরায়েলের সাম্প্রতিক আগ্রাসী তৎপরতা সিরিয়ার সংকটকে জটিলতর করে তুলেছে। তাদের এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে।
সূত্র: আরটি, রাসদ