গাজায় চলমান যুদ্ধ ইসরায়েলি সেনাদের ওপর এক গভীর ও স্থায়ী মানসিক ক্ষত তৈরি করেছে। দেশটির শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘চ্যানেল ১২’-এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এ তথ্য।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্তত ২০ হাজার ইসরায়েলি সেনা ‘কমব্যাট রিঅ্যাকশন’ বা পিটিএসডি-তে (পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিজঅর্ডার) আক্রান্ত হয়েছেন। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা মহলে আশঙ্কা করা হচ্ছে—এই সংখ্যা ভবিষ্যতে দ্বিগুণ হয়ে যেতে পারে।
চ্যানেলটির সামরিক বিশ্লেষক নীর দাফোরি বলেন, এই যুদ্ধ শুধু দেহ নয়, মনও ভেঙে দিয়েছে। যারা যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ফিরেছেন, তাঁদের অনেকে ঘন ঘন দুঃস্বপ্নে ভুগছেন, আতঙ্কে অবশ হয়ে যাচ্ছেন কিংবা আচরণগত জটিলতায় আক্রান্ত হচ্ছেন।
প্রতিবেদক মিখায়েল বেলান জানান, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আহত সেনাদের অন্তত এক-তৃতীয়াংশই মূলত মানসিক আঘাতে জর্জরিত। অথচ গণমাধ্যম ও জনআলোচনায় আলোচনার কেন্দ্রে থাকছে কেবল প্রাণহানি কিংবা শারীরিক ক্ষয়ক্ষতির দিকটি। মানসিক বিপর্যয়ের জায়গাটি প্রায়ই উপেক্ষিত।
তিনি বলেন, যুদ্ধের এই মানসিক মূল্য কেবল পরিসংখ্যান নয়, এটি বহু পরিবার, সমাজ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ওপর এক দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলবে। এই ক্ষতির দিকে আলো ফেলা এখন সময়ের দাবি।
বিশ্লেষকদের মতে, গাজায় দীর্ঘ সময় ধরে চলা সংঘর্ষ, অনবরত চাপ ও অনিশ্চয়তার পরিবেশ সেনাদের ভেতরে এক স্থায়ী মানসিক ব্যাধির জন্ম দিয়েছে। যাঁরা এসবের শিকার, তাঁদের বড় অংশই চিকিৎসা কিংবা কাউন্সেলিংয়ের সুযোগ না পেয়ে নিভৃতে এই যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছেন।
এই বাস্তবতা এখন ইসরায়েলের সামরিক কাঠামোর জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু অস্ত্রশস্ত্র বা প্রযুক্তির দিক থেকে নয়, রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা-ব্যবস্থায় মানসিক সক্ষমতার দিকটিও এখন সমান গুরুত্ব পাচ্ছে।
সূত্র: আল মায়াদিন