মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

লকহিড থেকে গুগল—গাজা গণহত্যায় সহযোগী ৬০-এর বেশি বিশ্বখ্যাত কোম্পানি

লকহিড থেকে গুগল—গাজা গণহত্যায় সহযোগী ৬০-এর বেশি বিশ্বখ্যাত কোম্পানি
লকহিড থেকে গুগল—গাজা গণহত্যায় সহযোগী ৬০-এর বেশি বিশ্বখ্যাত কোম্পানি। ছবি : Ai

গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস আগ্রাসনে সরাসরি সহযোগিতা করেছে অন্তত ৬০টি আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন কোম্পানি—জাতিসংঘের মানবাধিকার বিশেষ প্রতিনিধি ফ্রানচেস্কা অ্যালবানিজ সম্প্রতি এমন গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন।

জাতিসংঘে উপস্থাপিত তার সর্বশেষ প্রতিবেদনে অ্যালবানিজ গাজার চলমান পরিস্থিতিকে স্পষ্টভাবে ‘গণহত্যা’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এসব কোম্পানি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে অস্ত্র, ড্রোন এবং বিভিন্ন সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করছে, যা ব্যবহৃত হচ্ছে গাজা ও পশ্চিম তীরে সাধারণ মানুষের ওপর চালানো ভয়াবহ হামলায়।

প্রতিবেদনে যেসব প্রতিষ্ঠানের নাম উঠে এসেছে, তার মধ্যে রয়েছে সামরিক ও প্রযুক্তি খাতে বিশ্বজুড়ে পরিচিত বহু জায়ান্ট: লকহিড মার্টিন, লিওনার্দো, ক্যাটারপিলার, হুন্দাই, গুগল, অ্যামাজন ও মাইক্রোসফট।

অ্যালবানিজ বলেন, এই গণহত্যার মূল চালিকাশক্তি হলো মুনাফা। ইসরায়েলি আগ্রাসন থেকে এ কোম্পানিগুলো সরাসরি আর্থিক লাভবান হচ্ছে।

তিনি জানান, এই প্রতিবেদনটি ২০০টিরও বেশি দলিল ও প্রমাণের ওপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। তথ্য-উপাত্ত এসেছে বিভিন্ন দেশের সরকার, মানবাধিকার সংস্থা, গবেষক এবং সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর নিজস্ব নথিপত্র থেকে।

তার আহ্বান, এই সহযোগিতা বন্ধ করতে হবে। আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের দায়ে সংশ্লিষ্ট কোম্পানিগুলোর প্রধান নির্বাহীদের আন্তর্জাতিক আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে হবে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার পরিষদে উপস্থাপনের অপেক্ষায় থাকা এই প্রতিবেদনটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক না হলেও আন্তর্জাতিক তদন্ত ও জবাবদিহির পথে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

তবে প্রতিবেদনটি ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র কূটনৈতিক বিতর্ক। দখলদার ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ একে ‘তথ্য বিকৃতি’ এবং ‘ম্যান্ডেটের বাইরে গিয়ে কাজ করা’ বলেছে। জাতিসংঘের জেনেভা কার্যালয়ে নিযুক্ত ইসরায়েলি মিশন ইতোমধ্যে সংস্থাটিকে আহ্বান জানিয়েছে, যেন প্রতিবেদনটি আমলে না নেওয়া হয়।

অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রও প্রতিবেদনটির বিরোধিতা করে জাতিসংঘ মহাসচিবের কাছে অ্যালবানিজকে বরখাস্ত করার দাবি জানিয়েছে।

ফ্রানচেস্কা অ্যালবানিজ বলেন, যতদিন এই আগ্রাসন মুনাফা বয়ে আনবে, ততদিন এটি চলতেই থাকবে।

উল্লেখ্য, গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত শহীদ হয়েছেন ৫৬ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি। গাজা জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ধ্বংসস্তূপ, শিশুদের লাশ আর ভেঙে পড়া হাসপাতালই আজকের গণহত্যার জ্বলন্ত সাক্ষী।

সর্বশেষ