মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

গুজরাট গণহত্যার ২৩ বছর, ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়

গুজরাটে সংঘটিত ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ২৩ বছর পূর্ণ হলো। ২০০২ সালের ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে সংঘটিত এই নৃশংস গণহত্যায় কয়েক হাজার মুসলিম নিহত হন, বহু নারী নির্যাতনের শিকার হন, এবং অসংখ্য ঘরবাড়ি আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সংঘবদ্ধভাবে চালানো এই হত্যাযজ্ঞে প্রায় ৩,০০০ মুসলমানকে হত্যা করা হয়। ভয়াবহতার মাত্রা এতটাই ছিল যে অনেককে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়, নারী ও কিশোরীদের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালানো হয়। এমনকি শিশুদেরও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়।

২০০২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি গোধরা রেলস্টেশনের কাছে সবরমতি এক্সপ্রেস ট্রেনের একটি বগিতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে, যেখানে ৫৯ জন করসেবক নিহত হন। এই ঘটনার জেরে গুজরাটজুড়ে মুসলিমবিরোধী দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। বিভিন্ন গেরুয়া সংগঠনের নেতৃত্বে সশস্ত্র হামলাকারীরা মুসলিম মহল্লাগুলোতে ঢুকে নির্বিচারে হত্যা, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ চালায়।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, এই সহিংসতায় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা এবং কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ছিল। অনেক ক্ষেত্রেই পুলিশ অভিযোগ গ্রহণ করেনি, উদ্ধার তৎপরতা চালায়নি, এবং অপরাধীদের রক্ষার চেষ্টা করেছে। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন আদালতে মামলা হলেও অধিকাংশ অপরাধী শাস্তির বাইরে থেকে যায়।

গুজরাট গণহত্যা আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক নিন্দার জন্ম দেয়। জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন এই হত্যাযজ্ঞকে পরিকল্পিত জাতিগত নিধন হিসেবে আখ্যা দেয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ কিছু দেশ তৎকালীন গুজরাট সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।

২৩ বছর পরও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর বিচার পাওয়ার আশা রয়ে গেছে।

এই গণহত্যা ভারতের ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে রয়েছে, যা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রশ্নে এক ভয়াবহ উদাহরণ হয়ে আছে।

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা