আজ থেকে ৮১ বছর আগে, ১৯৪৪ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি, সোভিয়েত শাসক জোসেফ স্টালিনের নির্দেশে চেচেন ও ইনগুশ জনগণকে তাদের নিজভূমি থেকে মধ্য এশিয়ার দুর্গম অঞ্চলে নির্বাসনে পাঠানো হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তাদের বিরুদ্ধে সোভিয়েত বিরোধিতার অভিযোগ এনে এই গণনির্বাসনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই নির্বাসনযাত্রা ছিল অত্যন্ত কষ্টকর ও অমানবিক। শীতের তীব্র ঠান্ডা, খাদ্য ও চিকিৎসার অভাব এবং অমানবিক পরিবেশের কারণে বহু মানুষ ট্রেনের মধ্যেই মারা যান। ধারণা করা হয়, নির্বাসিতদের প্রায় অর্ধেকই যাত্রাপথে অথবা কঠিন জীবনযাপনের ফলে মৃত্যুবরণ করেন।
খাইবাখ গণহত্যা
নির্বাসনের সময় অনেক গ্রামে যারা যেতে অস্বীকার করেছিলেন বা শারীরিকভাবে সক্ষম ছিলেন না, তাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। চেচনিয়ার গ্যালানচোজ জেলার পাহাড়ি গ্রাম খাইবাখে সোভিয়েত কর্নেল গভিশিয়ানির নির্দেশে ৭০০-র বেশি মানুষকে একটি গোয়ালঘরে বন্দি করে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়। নিহতদের বেশিরভাগই ছিলেন বৃদ্ধ, নারী ও শিশু।
স্টালিনের মৃত্যুর পর, ১৯৫৭ সালে, জীবিতদের আবার উত্তর ককেশাসে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে ফিরে আসার পরও তারা চরম বৈষম্য ও বঞ্চনার শিকার হন।
আজও ইনগুশ ও চেচেন জনগণ এই দিনের ভয়াবহতা ভুলতে পারেনি। প্রতি বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি ইনগুশ জনগণ নাজরানের ‘মেমোরিয়াল অব মেমোরি অ্যান্ড গ্লোরি’-তে সমবেত হয়ে নির্বাসনের শিকার হওয়া লাখো মানুষের স্মরণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এই গণনির্বাসন ইতিহাসের এক নিষ্ঠুর অধ্যায় হয়ে রয়ে গেছে, যা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে বয়ে চলেছে।
সূত্র : DoamMuslims