গাজায় যুদ্ধ পুনরায় শুরু হলে বন্দিদের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে বলে সতর্ক করেছেন ইসরায়েলের সাবেক প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা আমোস গিলাদ। ইসরায়েলের শীর্ষ দৈনিক ‘ইয়েদিয়োথ আহরোনোথ’–এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
আমোস গিলাদ উল্লেখ করেছেন, যুদ্ধবিরতি চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলেও কেউই যুদ্ধের পুনরাবৃত্তি চান না। তিনি বলেন, ৭ অক্টোবর ২০২৩-এ ইসরায়েল তাদের বন্দিদের ফেলে রেখে চলে গিয়েছিল। বর্তমানে আলোচনার মাধ্যমেই তাদের ফিরিয়ে আনার একমাত্র উপায় রয়েছে।
প্রতিবেদনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা–সংক্রান্ত পরিকল্পনার ব্যর্থতার বিষয়টিও বিশদভাবে আলোচনা করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, জর্ডান ও মিসর উভয়েই এই পরিকল্পনাকে তাদের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে।
ইসরায়েলের জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ জর্ডান ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের গ্রহণে অনাগ্রহী, বিশেষত যারা গাজার বাসিন্দা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জর্ডান ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে ‘বিকল্প ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র’ তৈরি করার ষড়যন্ত্র হিসেবে দেখছে। এ ধরনের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে এটি ইসরায়েলের জন্যও বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে।
অন্যদিকে, মিসরও গাজার শরণার্থীদের আশ্রয় দিতে স্পষ্টভাবে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এমনকি বিশাল অঙ্কের আর্থিক সহায়তার প্রস্তাব দেওয়া হলেও দেশটি তা প্রত্যাখ্যান করেছে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, জর্ডান ও মিসরে ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণের বিরোধিতা বাড়ছে। একই ধরনের বিরোধিতা সৌদি আরবেও দেখা যাচ্ছে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ও নেতারা ট্রাম্পের পরিকল্পনার প্রতি সমর্থন জানালেও এই বিরোধিতা তাদের জন্য চাপ বাড়াচ্ছে।
আরব দেশগুলোর আসন্ন জরুরি বৈঠককে ইসরায়েলের জন্য উদ্বেগের কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষত বৈঠকটি রমজানের ঠিক আগে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যা ঐতিহ্যগতভাবে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে উত্তেজনা সৃষ্টি করে থাকে।
ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তের নিরাপত্তা নিয়েও প্রতিবেদনে আলোচনা করা হয়েছে। আমোস গিলাদ বলেন, হিজবুল্লাহ গুরুতর আঘাত পেলেও পুরোপুরি পরাজিত হয়নি। তাই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয়ের পাশাপাশি সিরিয়ার দিক থেকেও সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার প্রস্তুতি নিতে হবে।
প্রতিবেদনে ইরানকে ইসরায়েলের প্রধান হুমকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। ইরান পারমাণবিক অস্ত্রের সক্ষমতা অর্জনের পথে এগিয়ে যাচ্ছে এবং ইসরায়েলের চারপাশে একটি ‘অগ্নিবেষ্টনী’ তৈরি করছে, যা শুধু ইসরায়েল নয়, পুরো মধ্যপ্রাচ্যের জন্যই বিপজ্জনক হয়ে উঠছে।
সূত্র: আল মায়াদিন