ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস। সংগঠনটির এক শীর্ষ নেতা আল-মায়াদিনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ইসরায়েল একাধিকবার চুক্তি ভঙ্গ করেছে এবং দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়নের কোনো ইঙ্গিতও দিচ্ছে না।
তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতির অন্যতম শর্ত ছিল আকাশসীমায় ইসরায়েলের কার্যক্রম সীমিত রাখা। কিন্তু চুক্তি কার্যকর থাকার পরও প্রতিদিন ড্রোন নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। এছাড়া, ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া, নির্ধারিত সীমারেখা অতিক্রম করে ট্যাংক প্রবেশ করানো এবং গুরুত্বপূর্ণ সরঞ্জাম প্রবেশে বাধা দেওয়াও চুক্তির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
হামাসের অভিযোগ, ইসরায়েল গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা সামগ্রী, ভারী যন্ত্রপাতি এবং শরণার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় অস্থায়ী বাসস্থানের প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। সংগঠনটি আশঙ্কা করছে, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ঘোষিত বাস্তুচ্যুতি পরিকল্পনার কারণে ইসরায়েল চুক্তির দ্বিতীয় ধাপ বাস্তবায়ন করবে না।
চুক্তি লঙ্ঘনের প্রতিবাদে হামাস বন্দি বিনিময়ের পরবর্তী ধাপ স্থগিতের ঘোষণা দিয়েছে। সংগঠনটি জানায়, ইসরায়েল যেভাবে একের পর এক শর্ত ভঙ্গ করছে, তাতে চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়নের নিশ্চয়তা নেই।
হামাসের বিবৃতিতে বলা হয়, ইসরায়েল যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের ঘরে ফেরার পথ রুদ্ধ করছে, খাদ্য ও চিকিৎসাসামগ্রী প্রবেশে বাধা দিচ্ছে এবং উদ্ধারকাজের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম আটকে রাখছে। সংগঠনটি জানিয়েছে, চুক্তি বাস্তবায়নের স্বার্থে তারা প্রতিটি লঙ্ঘনের তথ্য মধ্যস্থতাকারীদের সরবরাহ করেছে। তবে ইসরায়েল তার অবস্থান পরিবর্তন করেনি।
হামাসের সামরিক শাখা কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবাইদা সোমবার এক বিবৃতিতে জানান, শনিবার মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও ইসরায়েলি বন্দিদের হস্তান্তর ‘অনির্দিষ্টকালের জন্য’ স্থগিত রাখা হয়েছে। তার দাবি, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে চুক্তি ব্যর্থ করার চেষ্টা করছে।
হামাসের ঘোষণার পর তেল আবিবে বন্দিদের পরিবারের সদস্যরা বিক্ষোভ করেছেন। তারা দ্রুত সমাধানের দাবিতে মধ্যস্থতাকারীদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এদিকে, ইসরায়েলি গণমাধ্যম জানিয়েছে, হামাসের বিবৃতির পরপরই প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এক জরুরি বৈঠক ডেকেছেন। সেখানে যুদ্ধবিরতি চুক্তি ও বন্দি বিনিময়ের বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে বলে জানা গেছে।
সূত্র : আল মায়াদিন