ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তাবিষয়ক সদ্য পদত্যাগী মন্ত্রী এবং কট্টর ডানপন্থী দল ‘ওতস্মা ইহুদিয়োথ’-এর প্রধান ইতামার বেন গভির বলেছেন, ইসরায়েল এখন ‘মধ্যপ্রাচ্যের কৌতুক’ হয়ে গেছে।
ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম মারিভ ও চ্যানেল ৭-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির চুক্তিতে ক্ষুব্ধ হয়ে পদত্যাগ করেছেন বেন গভির। তিনি দাবি করেন, ‘আমি একমাত্র ব্যক্তি ছিলাম, যে গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর বিরোধিতা করেছিল। অথচ সরকার সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা আমাদের দুর্বলতার প্রকাশ ঘটিয়েছে।’
বেন গভির গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের ‘স্বেচ্ছামূলক অভিবাসন’ উৎসাহিত করার পক্ষে মত দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের উচিত গাজার ফিলিস্তিনিদের চলে যেতে উৎসাহিত করা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, এখনো সময় আছে, কিন্তু আমাদের জন্য সময় নেই।’
তিনি আরও বলেন, ‘হামাসকে ক্ষমতা থেকে সরানো ছাড়া ইসরায়েলের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। হামাসের পতন ছাড়া পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠারও কোনো মূল্য থাকবে না।’
বেন গভির স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি সরকারে ফিরবেন কেবল তখনই, যদি সরকার হামাসের পতন ঘটানোর জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেয়। তিনি বলেন, ‘যদি হামাসকে সম্পূর্ণভাবে পরাজিত করা হয়, গাজায় মানবিক সহায়তা ও জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ করা হয় এবং ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়, তাহলে আমি সরকারে ফিরে আসব। কিন্তু যদি আবারও হামাসের অস্ত্রধারীদের দেখতে পাই, কিংবা শুধু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় যে ভবিষ্যতে কিছু করা হবে, তাহলে আমি আর কখনোই সরকারের অংশ হব না।’
চ্যানেল ৭-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার বেন গভিরকে অনুরোধ করেছে যেন তিনি গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের অভিবাসনের বিষয়ে তার প্রস্তাবিত আইন সংসদে উত্থাপন দুই সপ্তাহের জন্য স্থগিত রাখেন। সরকার এ বিষয়ে মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে আলোচনা করতে চায়।
এদিকে, গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, তিনি গাজা দখল করতে চান এবং সেখানে বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য বিশ্বজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ও প্রতিদ্বন্দ্বী উভয় পক্ষই ‘দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান’-এর প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছে।
সূত্র: মারিভ, চ্যানেল ৭ (ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম)