ইসরায়েলের টানা হামলায় গৃহহীন হওয়া লাখো ফিলিস্তিনি এখন প্রবল ঠান্ডা, ভারী বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার মধ্যে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা UNRWA এক বিবৃতিতে জানায়, গাজার শরণার্থী শিবিরগুলোতে বসবাসরত মানুষের জীবন এখন চরম সংকটাপন্ন।
সংস্থাটি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ এক পোস্টে জানায়, ‘ইসরায়েলের ধ্বংসযজ্ঞের ফলে বহু ফিলিস্তিনি এখনো অস্থায়ী আশ্রয়ে দিন কাটাচ্ছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়া তাদের শীতজনিত মারাত্মক ঝুঁকিতে ফেলেছে।’
UNRWA একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে, যেখানে দেখা যায়, খান ইউনুসের উত্তর-পশ্চিমের মাওয়াসি এলাকায় ঝড়ো বাতাসে শরণার্থীদের তাবুগুলো উড়ে যাচ্ছে এবং তাদের সামগ্রী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ছে। সংস্থাটি জানায়, তাদের ত্রাণকর্মীরা শরণার্থীদের তাবু, গদি, কম্বল ও শীতের পোশাক বিতরণ অব্যাহত রেখেছে।
এর আগে, হামাসের মুখপাত্র আবদুল লতিফ কানু এক বিবৃতিতে বলেন, ‘ইসরায়েলের হামলায় গৃহহীন হওয়া শরণার্থীরা গত রাতে ভয়াবহ ও বিপর্যয়কর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত ইসরায়েলকে মানবিক আইন মেনে চলতে বাধ্য করা।’
আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদক জানান, রাতভর ভারী বৃষ্টিপাতে গাজার উত্তর ও দক্ষিণের শরণার্থী শিবির এবং তাবুগুলো তলিয়ে গেছে। এতে ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে, যারা এরই মধ্যে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে বসবাস করতে বাধ্য হচ্ছেন।
গাজার বিভিন্ন এলাকায় ধ্বংসস্তূপের ওপর কিংবা মাওয়াসির মতো এলাকায় বহু মানুষ কাপড় ও নাইলনের তৈরি অস্থায়ী তাবুতে বসবাস করছেন। অনেকেই খোলা রাস্তায়, খেলার মাঠে, উন্মুক্ত জায়গায় কিংবা স্কুলে আশ্রয় নিয়েছেন, যেখানে শীত থেকে বাঁচার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিসের তথ্য অনুযায়ী, গত ১৫ মাসের ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজার ৮৮% অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনাগুলোর মধ্যে বসতবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুলসহ গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
UNRWA ও অন্যান্য মানবাধিকার সংস্থাগুলো আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি দ্রুত ও কার্যকর সহায়তা পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, গাজার পরিস্থিতি এখন এক গভীর মানবিক সংকটে পরিণত হয়েছে, যেখানে খাদ্য, ওষুধ ও আশ্রয়ের চরম সংকট দেখা দিয়েছে।
সূত্র : আনাদোলু এজেন্সি