মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

গাজা দখলের ঘোষণা ট্রাম্পের

গাজা দখলের ঘোষণা ট্রাম্পের
গাজা দখলের ঘোষণা ট্রাম্পের। ছবি : আল জাজিরা

গাজা উপত্যকার ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক বৈঠকের পর মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজার ওপর ‘দীর্ঘমেয়াদি মালিকানা’ প্রতিষ্ঠা করতে চায়।

নেতানিয়াহুর সঙ্গে গাজার পুনর্গঠন ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা শেষে ট্রাম্প জানান, ‘যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করবে এবং সেখানে একটি বিশেষ মিশন পরিচালনা করবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘গাজায় একটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে, যা অগণিত কর্মসংস্থান ও আবাসনের সুযোগ তৈরি করবে।’

ট্রাম্পের দাবি, গাজা নিয়ন্ত্রণের এই ধারণা বিভিন্ন আন্তর্জাতিক নেতৃত্বের সমর্থন পেয়েছে। তার ভাষায়, ‘গাজা এখন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সেখানকার মানুষদের অন্যত্র পুনর্বাসন করে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের সুযোগ করে দেওয়া যেতে পারে।’

গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের পর্যটনস্বর্গ’ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যাশা প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, ‘গাজা উপত্যকা যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে এলে এটি এক অসাধারণ স্থানে পরিণত হতে পারে।’

পুনর্বাসন ও সামরিক উপস্থিতির ইঙ্গিত

গাজার বর্তমান বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে সেখানে নতুন করে উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের ইচ্ছা প্রকাশ করে ট্রাম্প বলেন, ‘গাজায় পুনর্গঠন করা হবে নতুন বাসিন্দাদের জন্য, যারা বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশ থেকে আসবে।’

তিনি আরও জানান, ‘আমি জর্ডান ও মিশরকে ফিলিস্তিনিদের জন্য প্রয়োজনীয় জমি দিতে রাজি করাতে পারব বলে মনে করি। জর্ডানের রাজা আব্দুল্লাহ এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আব্দুল ফাত্তাহ সিসি এই জমি দিতে সম্মত হবেন, যেখানে গাজার মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারবে।’

গাজার পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে সেখানে মার্কিন সেনা মোতায়েনের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেননি ট্রাম্প। তার ভাষায়, ‘আমি গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি মালিকানা স্পষ্টভাবে দেখতে পাচ্ছি। এটি এই অঞ্চল এবং পুরো মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা আনবে।’

ট্রাম্প আরও বলেন, ‘এটি কোনো হালকাভাবে নেওয়া সিদ্ধান্ত নয়। যাদের সঙ্গেই আলোচনা করেছি, সবাই যুক্তরাষ্ট্রের এই জমি মালিকানার ধারণাটি সমর্থন করেছে।’

এ সময় তিনি গাজা, ইসরায়েল, সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ সফরের পরিকল্পনার কথাও জানান। তবে সফরের নির্দিষ্ট সময়সূচি প্রকাশ করেননি।

ইতিহাস বদলে দেবে এই পরিকল্পনা’

ট্রাম্পের পরিকল্পনাকে ‘ইতিহাস বদলে দেওয়ার মতো’ বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তিনি বলেন, ‘গাজার পরিস্থিতি নিয়ে ট্রাম্পের ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি আমাদের যুদ্ধের লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে এবং মধ্যপ্রাচ্যের মানচিত্র নতুনভাবে গড়ে তুলবে।’

নেতানিয়াহু ট্রাম্পকে ‘ইসরায়েলের ইতিহাসে হোয়াইট হাউসে সবচেয়ে বড় বন্ধু’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘আমরা আমাদের অভিন্ন শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই করছি এবং মধ্যপ্রাচ্যের চেহারা বদলে দিচ্ছি।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘ট্রাম্পের নেতৃত্বে আমরা চারটি ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। তার সহায়তায় আমরা জিম্মি উদ্ধার করতে পেরেছি এবং ইসরায়েলের ওপর আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করাতে সক্ষম হয়েছি।’

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা