উত্তর গাজায় যুদ্ধবিধ্বস্ত পরিস্থিতির মধ্যেই জীবনযুদ্ধে লড়াই করছে ১৫ বছর বয়সী আহমাদ কারকাজ। ইসরায়েলি ড্রোনের নজরদারিতে থাকা জাবালিয়ার পথে ঠেলাগাড়িতে পানির জার নিয়ে হেঁটে চলে সে। পরিবারের খরচ চালাতে এই কঠিন কাজে নামতে হয়েছে তাকে।
যুদ্ধের ধ্বংসস্তূপে পরিণত গাজার অলিগলিতে ছোট ছোট শিশুরা আজ জীবিকার তাগিদে ছুটে বেড়াচ্ছে। আহমাদও তাদেরই একজন। প্রতিদিন ভোরে উঠে বাবা সাইফ কারকাজের সঙ্গে দুটি ৪০০ লিটারের ড্রাম ভর্তি করে পানি টানতে বের হয় সে। এরপর সারা দিন শহরের বিভিন্ন এলাকায় পানি সরবরাহের কাজ করে।
আহমাদ বলছে, ‘সকালে উঠে বাবা আর আমি ড্রাম ভরি। এরপর রাস্তা ঘুরে পানি বিক্রি করি। অনেক সময় কাজ শেষ হতে রাত হয়ে যায়। এটা খুব কঠিন, কিন্তু আমাদের পরিবারের খাবারের জন্য এটা করতেই হয়।’
যুদ্ধের কারণে পানির তীব্র সংকটের মধ্যেই আহমাদ ও তার বাবা প্রতিদিন ঠেলাগাড়ি নিয়ে ঘুরে বেড়ান। কিন্তু কাজটি মোটেও নিরাপদ নয়। জাবালিয়ার মতো অবরুদ্ধ এলাকায় ঢোকা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। আহমাদ জানায়, ‘আমাদের গাড়ি এর আগেও তিনবার ড্রোনের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারপরও আমরা যেতে বাধ্য হই।’
ইউনিসেফের তথ্যমতে, চলমান যুদ্ধের কারণে গাজার শিশুরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ৭ই অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া এই যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ১৪ হাজারেরও বেশি শিশু শহিদ হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অনেক। অপুষ্টি ও ঠাণ্ডায় ভুগছে অসংখ্য শিশু।
আহমাদ জানায়, ‘আমি চাই এই যুদ্ধ শেষ হোক। আমরা আবার স্কুলে যেতে পারি। আর বাবা-মাকে এভাবে ঝুঁকি নিতে না হয়।’
যুদ্ধের এই ভয়াবহতা কেবল শিশুদের শিক্ষার অধিকার কেড়ে নেয়নি, তাদের জীবন ও ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত করে তুলেছে। গাজার অলিগলিতে আহমাদের মতো হাজারো শিশু আজ বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করছে।
সূত্র : সাফা