মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

পুনর্গঠিত হচ্ছে হামাস, নেতৃত্বে আছেন ‘ছায়ামানব’ সিনওয়ার

পুনর্গঠিত হচ্ছে হামাস, নেতৃত্বে আছেন 'ছায়ামানব' সিনওয়ার
পুনর্গঠিত হচ্ছে হামাস, নেতৃত্বে আছেন 'ছায়ামানব' সিনওয়ার। ছবি : আল জাজিরা

মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গাজায় হামাসের পুনর্গঠনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ‘ছায়ামানব’ খ্যাত মুহাম্মদ সিনওয়ার। তিনি হামাসের প্রয়াত নেতা শহিদ ইয়াহইয়া সিনওয়ারের ছোট ভাই। ইয়াহইয়া সিনওয়ারের শাহাদাতের পর গাজায় হামাসের সামরিক কাঠামো পুনর্গঠনে মুহাম্মদ সিনওয়ার প্রধান ভূমিকা পালন করছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরায়েলি হামলায় ইয়াহইয়া সিনওয়ার শহিদ হওয়ার পর হামাস বড় ধাক্কা খেয়েছিল। তবে একই সময়ে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনের ফলে নতুন প্রজন্মের যোদ্ধারা এগিয়ে এসেছে। পাশাপাশি গাজায় ফেলা ইসরায়েলের অসংখ্য ’অবিস্ফোরিত’ বোমা নতুন সামরিক কাঠামো বিনির্মাণে কাজে লাগছে। মুহাম্মদ সিনওয়ারের নেতৃত্বে গাজার ভেতরে গড়ে ওঠা এই সামরিক কাঠামো ইসরায়েলের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ইসরায়েলের অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল আমির আফিফি মন্তব্য করেছেন, ‘হামাসের পুনর্গঠনের গতি আমাদের ধ্বংস প্রচেষ্টার চেয়ে অনেক দ্রুত। মুহাম্মদ সিনওয়ারই এখন এই কর্মযজ্ঞের মূল দায়িত্বশীল।’

মুহাম্মদ সিনওয়ারের উত্থান

ইয়াহইয়া সিনওয়ারের শাহাদাতের পর হামাসের বিদেশি নেতৃত্ব একটি যৌথ কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিলেও গাজায় থাকা যোদ্ধারা মুহাম্মদ সিনওয়ারের নেতৃত্বে স্বাধীনভাবে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। মধ্যস্থতাকারীরা জানিয়েছেন, গাজায় থাকা হামাসের যোদ্ধারা এখন মুহাম্মদ সিনওয়ারের নেতৃত্বেই পরিচালিত হচ্ছে।

প্রায় ৫০ বছর বয়সী মুহাম্মদ সিনওয়ার অল্প বয়সেই হামাসে যোগ দেন। তিনি ছিলেন হামাসের সামরিক শাখা ইজ্জুদ্দিন আল-কাসসামের প্রধান মোহাম্মদ আদ-দাইফের ঘনিষ্ঠজন। যদিও তার অ্যাক্টিভিটি সবসময় আড়ালে থাকায় তিনি ‘শ্যাডোম্যান’ বা ‘ছায়ামানব’ নামে পরিচিতি পেয়ে যান। ইয়াহইয়া সিনওয়ারের মতো দীর্ঘ সময় ইসরায়েলি কারাগারে কাটাতে না হলেও মুহাম্মদ বেশ কয়েকবার বন্দি হয়েছেন।

ইসরায়েলি গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, ২০০৬ সালে এক ইসরায়েলি সেনাকে অপহরণের পেছনে মুহাম্মদ সিনওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ওই অপহরণই পরবর্তীতে ইয়াহইয়া সিনওয়ারের মুক্তির পথ খুলে দেয়।

বিশ্লেষকদের মতে, মুহাম্মদ সিনওয়ার এখন গাজায় হামাসের সর্বোচ্চ সামরিক নেতা। তার সহযোগী হিসেবে রয়েছেন উত্তর গাজার সামরিক কমান্ডার ইজ্জুদ্দিন হাদ্দাদ। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা মুহাম্মদ সিনওয়ারকে মরিয়া হয়ে খোঁজছে।

ইসরায়েলের দাবি, হামাসের সামরিক কাঠামো ইতিমধ্যে ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের ১৭ হাজার যোদ্ধাকে হত্যা করা হয়েছে। তবে এই দাবির পক্ষে নিরপেক্ষ কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

মুহাম্মদ সিনওয়ারের নেতৃত্বে হামাসের পুনর্গঠন কেবল সামরিক সক্ষমতা বাড়াচ্ছে না, এটি ইসরায়েলের জন্য নতুন ধরনের চ্যালেঞ্জও তৈরি করছে। মুহাম্মদ সিনওয়ারের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গাজায় দীর্ঘমেয়াদি সংঘাতের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করতে পারে।

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা