ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যমে গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। তারা বলছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া এখন আর কোনো সুফল বয়ে আনছে না। যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির নেতা ইয়াইর গোলান বলেছেন, ‘গাজায় সামরিক যুদ্ধ অনেক আগেই শেষ হয়েছে। বর্তমান সরকার প্রকৃত কোনো রাজনৈতিক প্রক্রিয়া পরিচালনা না করে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য যুদ্ধ অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি তারা নতুন করে গাজায় ইহুদি বসতি স্থাপনের ইস্যু উত্থাপন করছে।’ তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘এক্স’-এ দেওয়া এক পোস্টে এ মন্তব্য করেন।
এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে গোলান বলেন, ‘গাজায় কোনো ইসরায়েলি সেনার মৃত্যুই যৌক্তিক নয়, এটি সম্পূর্ণ অকারণ। সরকারের উচিত অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করা এবং রক্তপাত থামানো।’
ইসরায়েলের শীর্ষস্থানীয় সংবাদ মাধ্যম হারেৎজ এক সম্পাদকীয় মন্তব্যে বলেছে, ‘যুদ্ধবন্দি ইসরায়েলি নাগরিকরা প্রতি ঘণ্টায় দুর্বল হয়ে পড়ছে। তাদের জীবিত থাকার সম্ভাবনা ক্রমশ কমছে। সরকার যদি দ্রুত কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারে, তবে এই বন্দিদের জীবন রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।’
পত্রিকাটি আরও বলেছে, ‘গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করাও এখন একটি স্বাধীন লক্ষ্য। এটি কেবল ইসরায়েলি সেনা ও বন্দিদের জীবন রক্ষার জন্যই নয়, বরং গাজার জনগণের উপর যে ধ্বংস নেমে এসেছে, তা বন্ধ করার জন্যও জরুরি।’
ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর বর্তমান কৌশল ‘প্রবেশ ও প্রত্যাহার’ নিয়ে দেশটির গণমাধ্যমে তীব্র সমালোচনা হয়েছে। গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, গাজায় প্রবেশ করে অস্থায়ী অভিযান পরিচালনা এবং পরবর্তীতে সেনা প্রত্যাহার করার কৌশল হামাসের জন্য সুবিধা তৈরি করছে।
গত কয়েকদিনে হামাস এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে ইসরায়েলি সেনাদের ওপর একাধিক হামলা চালিয়েছে। এক বিস্ফোরণে চার সেনা নিহত এবং আরও কয়েকজন আহত হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যম এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নেতানিয়াহু যদি যুদ্ধ বন্ধ না করেন, তবে ইসরায়েলি সেনাদের জীবন আরও বিপদের মুখে পড়বে। একইসঙ্গে গাজায় বন্দি থাকা ইসরায়েলি নাগরিকদের জীবনও মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে।
গাজা উপত্যকায় চলমান যুদ্ধ ইসরায়েলের ভেতরেও তীব্র বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়া এখন কেবল ইসরায়েলি সেনা ও বন্দিদের জন্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে নেতানিয়াহু সরকারের উচিত যুদ্ধ বন্ধ করে একটি স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের পথে অগ্রসর হওয়া।
সূত্র : আল মায়াদিন











