মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

উত্তর সিরিয়ায় তুরস্ক সমর্থিত বাহিনী ও কুর্দিদের সংঘর্ষে নিহত ৩১

উত্তর সিরিয়ায় তুরস্ক সমর্থিত বাহিনী ও কুর্দিদের সংঘর্ষে নিহত ৩১
উত্তর সিরিয়ায় তুরস্ক সমর্থিত বাহিনী ও কুর্দিদের সংঘর্ষে নিহত ৩১। ছবি : এপি

উত্তর সিরিয়ায় তুরস্ক সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী এবং কুর্দি যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত রয়েছে। রোববার থেকে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে দুই পক্ষের অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন। সিরিয়ার মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা এ তথ্য জানিয়েছে।

পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানায়, সোমবার তুরস্কের বাহিনী ও তাদের মিত্ররা সিরিয়ার রাক্কার সুলুক শহরের দক্ষিণে তেরওয়াজিয়া গ্রামে ভারী গোলাবারুদ ও স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে হামলা চালায়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র লড়াই হয়। কুর্দি নেতৃত্বাধীন সিরিয়ান ডেমোক্র্যাটিক ফোর্সেস (এসডিএফ) পাল্টা হামলা চালিয়ে তুরস্ক সমর্থিত বাহিনীর গোলার জবাব দেয়। তবে এখন পর্যন্ত এই সংঘর্ষে মানবিক ক্ষয়ক্ষতির বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।

মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থা আরও জানায়, রোববার এসডিএফ-এর বিশেষ বাহিনী হাসাক্কা প্রদেশের তাল তামর শহরের কাছে রেইহানিয়া গ্রামে তুরস্ক সমর্থিত গোষ্ঠীর ওপর হামলা চালায়। এতে পাঁচজন নিহত এবং সাতজন আহত হয়।

এ ছাড়া আলেপ্পোর পূর্বাঞ্চলে মাঞ্জিব এলাকায় রোববার তুরস্ক সমর্থিত গোষ্ঠী এবং এসডিএফ-এর মধ্যে তীব্র লড়াইয়ের সময় তুরস্ক সমর্থিত ১৩ জন এবং এসডিএফ-এর দুইজন যোদ্ধা নিহত হন। একই দিনে মাঞ্জিবের আশপাশে সংঘর্ষে তুরস্ক সমর্থিত ছয়জন এবং এসডিএফ-এর তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা এএফপি।

এসডিএফ জানায়, তারা তুরস্কের দুটি রাডার, একটি জ্যামিং সিস্টেম এবং একটি সাঁজোয়া যান ধ্বংস করেছে।

অন্যদিকে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হাইয়াত তাহরির আশ-শাম ২৭ নভেম্বর আকস্মিক হামলা চালিয়ে ক্ষমতা দখল করে। একই সময়ে তুরস্ক সমর্থিত বাহিনী কুর্দি যোদ্ধাদের ওপর হামলা চালায় এবং তাল রিফাত ও মাঞ্জিব এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।

পর্যবেক্ষণ সংস্থা জানায়, বর্তমানে তুরস্ক সমর্থিত ন্যাশনাল আর্মি কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় অগ্রসর হচ্ছে। এ নিয়ে তুরস্কের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তারা সিরিয়ার ক্ষমতার শূন্যতা কাজে লাগিয়ে উত্তরাঞ্চলের কুর্দি-নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলো দখল করতে চাইছে।

উল্লেখ্য এসডিএফ এখনও উত্তর-পূর্ব সিরিয়ার বিস্তৃত অঞ্চল এবং পূর্ব দেইর আল-জোর প্রদেশের কিছু অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। এই এলাকাগুলো ফোরাত নদীর পূর্ব তীরে অবস্থিত এবং কুর্দিরা সেখানে স্বায়ত্তশাসিত প্রশাসন পরিচালনা করছে।

২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে তুরস্ক উত্তর সিরিয়ায় তিনটি সামরিক অভিযান চালায়। এসব অভিযানে তারা এসডিএফ-এর মূল অংশ কুর্দি ইউনিটস প্রোটেকশন ফোর্সেস (ওয়াইপিজি)-এর বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে সীমান্তবর্তী দুটি বড় অঞ্চল নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়।

রোববার আল-আরাবিয়া চ্যানেলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সিরিয়ার নতুন প্রশাসনের সর্বোচ্চ নেতা আহমদ আশ-শারাহ বলেন, কুর্দি যোদ্ধাদের সিরিয়ার ঐক্যবদ্ধ সেনাবাহিনীর অধীনে আসা উচিত।

তিনি আরও বলেন, ‘অস্ত্র শুধুমাত্র রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকা উচিত। যারা অস্ত্রধারী এবং যোগ্য, তারা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগ দিতে চাইলে তাদের স্বাগত জানানো হবে।’

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা