গাজা ও লেবাননে ১৫ মাসব্যাপী চলা যুদ্ধের ফলাফল নিয়ে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল-এ ২০ ডিসেম্বর প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু দাবি করেন, গাজা ও লেবাননসহ তাদের মিত্রদের ওপর চালানো যুদ্ধ ইসরায়েলের জন্য এক বড় বিজয়। তবে এই যুদ্ধে দেশটির ক্ষতির মাত্রাও কম নয় বলে মন্তব্য করেছেন নেতানিয়াহু।
নেতানিয়াহু বলেন, ‘ইরান সিরিয়ায় হয়তো ৩০ বিলিয়ন ডলার এবং লেবাননে ২০ বিলিয়ন ডলার খরচ করেছে। হামাসের পেছনে আরও কত খরচ হয়েছে, তা একমাত্র সৃষ্টিকর্তাই জানেন। তবে এসব বিনিয়োগ একেবারে বৃথা গেছে।’
গাজা থেকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ যোদ্ধাদের হামলার পর ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়া নিয়ে নেতানিয়াহু জানান, ‘৯ অক্টোবর আমি গাজার আশপাশের জনপদের নেতাদের বলেছিলাম, ধৈর্য ধরুন। আমরা মধ্যপ্রাচ্যকে বদলে দেব। কয়েক মাস পর আমরা তা করতে পেরেছি।’
তবে এই যুদ্ধের খরচ এবং ক্ষতির দিকটি তিনি এড়িয়ে গেছেন। ইসরায়েলের অভ্যন্তরীণ তথ্য অনুযায়ী, এই সংঘাত দেশটির সেইসব গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রকে নষ্ট করেছে, যা বিশ্বজুড়ে থাকা ইহুদি জনগোষ্ঠীকে একত্র করার প্রচেষ্টার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিলো।
ইসরায়েলের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বাসস্থান ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া ইহুদির সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ।
এভাবে বিশাল ক্ষয়ক্ষতির মাঝেই গাজা ও লেবাননের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধের ফলাফল নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

তিক্ত বাস্তবতা
১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনের নাকাবা এবং এর ওপর ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার পর এই প্রথম দেশটি এমন অভ্যন্তরীণ সংকটের মুখোমুখি হয়েছে। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট জানিয়েছে, দেশ ছাড়ার সময় বহু ইসরায়েলি সঙ্গে করে অর্থ, শিক্ষাগত যোগ্যতা এবং পেশাগত দক্ষতা নিয়ে গেছেন। এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমটি মন্তব্য করেছে, এ পরিস্থিতি এক তিক্ত বাস্তবতার প্রতিফলন।
অন্যদিকে ইসরায়েলি সংবাদ মাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে, ২০২৪ সালের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮ হাজার ইসরায়েলি কানাডার অস্থায়ী কর্ম ভিসা পেয়েছেন। কানাডার অভিবাসন বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এই সংখ্যা ২০২৩ সালের তুলনায় পাঁচ গুণ বেশি।
এ প্রসঙ্গে অ্যান্টি-জায়নিস্ট ইতিহাসবিদ ইলান পাপে বলেছেন, গাজার তুফানুল-আকসা অভিযানের পর থেকে দেশ ছেড়েছেন প্রায় ৭ লাখ ইসরায়েলি। ১৬ নভেম্বর মাদ্রিদে স্পেনের আরবি হাউস ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক সেমিনারে পাপে বলেন, ‘অনেক ইসরায়েলি দেশ ছেড়েছেন। যদিও এই সংখ্যা নিয়ে কোনো সরকারি তথ্য নেই, কারণ ইসরায়েলের পরিসংখ্যান দপ্তর তা প্রকাশ করবে না। তবে আমাদের নিজস্ব সূত্র বলছে, প্রায় ৭ লাখের মতো মানুষ দেশ ছেড়েছেন।’
এদিকে যেসব জনগোষ্ঠীকে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ধৈর্য ধরতে বলেছেন, তাদের পরিস্থিতি নিয়েও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে এসেছে। ইসরায়েলি সংসদ নেসেটের তথ্য ও জ্ঞান কেন্দ্র জানিয়েছে, ২০২৪ সালে দক্ষিণ ও উত্তরাঞ্চল থেকে যুদ্ধের কারণে প্রায় ১ লাখ ৪৩ হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এসব বাস্তুচ্যুত মানুষের মধ্যে ৬৮ হাজার ৫০০ জন লেবাননের সীমান্তবর্তী উত্তরাঞ্চল থেকে এসেছে। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপ বলছে, এই সংখ্যা প্রায় ৮০ হাজার। বাকি ৭৪ হাজার ৫০০ জন গাজার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তাদের জন্য ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ১০০টি শহরের ৪২০টি হোটেলে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ইসরায়েলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো এত বড় মাত্রায় জনবল এবং সামরিক সরঞ্জামের ক্ষতি হয়েছে। সম্প্রতি হিযবুল্লাহ-এর সঙ্গে যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নেওয়ার পেছনে মূল কারণ ছিল সামরিক শক্তির সংকট। ইসরায়েলের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম মারিভ জানিয়েছে, ২৭ নভেম্বর যুদ্ধবিরতির পক্ষে সায় দিতে বাধ্য হন প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। তার ভাষায়, ‘অস্ত্র ও সরঞ্জামের মজুদ পুনর্গঠন এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে।’
সংবাদমাধ্যমটির সামরিক প্রতিবেদক আভি আশকেনাজি জানান, যুদ্ধবিরতির পর ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ লেবাননের সঙ্গে নয়; বরং যুক্তরাষ্ট্র ও জার্মানির সঙ্গে। যুদ্ধের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ইসরায়েলকে এখন যুদ্ধবিমান, হেলিকপ্টার, ট্যাংক, কামান, ক্ষেপণাস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র সংগ্রহে ব্যাপক উদ্যোগ নিতে হবে।
আশকেনাজি আরও বলেন, ‘ইসরায়েলের সামরিক বাহিনীর সবচেয়ে উদ্বেগজনক অবস্থা দেখা দিয়েছে হেলিকপ্টার বহরে। বিশেষত অ্যাপাচি স্কোয়াডগুলোর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। এছাড়া বোমা ও অন্যান্য অস্ত্র সরঞ্জামের মজুদেও ঘাটতি দেখা দিয়েছে। যুদ্ধকালীন সময়ে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো পূর্ব পরিকল্পিত সময়ের চেয়ে অনেক বেশি ব্যবহার হয়েছে, যার ফলে এগুলোর কার্যক্ষমতা দ্রুত কমে যাচ্ছে। এখন এফ-১৫ এবং এফ-৩৫ মডেলের নতুন যুদ্ধবিমান কেনা অত্যন্ত জরুরি।’
তিনি উল্লেখ করেন, পুরোনো এফ-১৫ স্কোয়াডগুলোর অবস্থা সবচেয়ে সংকটাপন্ন। যুদ্ধের সময় যুক্তরাষ্ট্র কিছু ব্যবহৃত বিমান সরবরাহ করলেও তা প্রয়োজন মেটানোর জন্য যথেষ্ট ছিল না। নতুন যুদ্ধবিমান সরবরাহেও বিলম্ব হচ্ছে। আশকেনাজি বলেন, অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোটরিচ এই কেনাকাটা নিয়ে দীর্ঘ গবেষণার উপর জোর দিয়েছিলেন, যা এখন চরম সংকটের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, অস্ত্র ও সরঞ্জামের এই ঘাটতি পূরণে ইসরায়েলকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। বিশেষ করে সামরিক শক্তি পুনর্গঠনে ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া ছাড়া দেশটির সামনে কোনো বিকল্প নেই।

হতাহত
৭ অক্টোবরের হামলার প্রাণঘাতী মূল্য নিয়ে ইসরায়েলের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে তুমুল আলোচনা। ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই হামলায় এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন প্রায় ১,১৬৩ জন। এদের মধ্যে রয়েছেন সামরিক বাহিনীর সদস্য ও বেসামরিক নাগরিকরা। আহত হয়েছেন ১,৯৪১ জন, যাদের মধ্যে প্রায় ৩৬০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বা গুরুতর। এছাড়া, এই হামলায় বেশ কয়েকজন বিদেশি নাগরিক নিহত হন এবং ২৫১ জনকে গাজায় জিম্মি করে নেয়া হয়। অপহৃতদের মধ্যে সেনা সদস্য ও অফিসার ছাড়াও বিদেশি নাগরিক রয়েছেন, তবে বেশিরভাগই ইসরায়েলি।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, হামাসের সামরিক শাখা কাসসাম ব্রিগেডের যোদ্ধারা ওই হামলার প্রথম দিনেই ৩০১ জন সেনা, ৫৫ জন পুলিশ সদস্য এবং ১০ জন গোপন নিরাপত্তা সংস্থা (শিন বেত)-এর সদস্যকে হত্যা করে। গাজায় চলমান সংঘর্ষে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৮১৬ জন সেনা ও অফিসার। এদের মধ্যে ৩৮৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন স্থল অভিযানে। আহত হয়েছেন ৫,৪৭৭ জন সেনা ও অফিসার, যাদের মধ্যে শতাধিকের অবস্থা গুরুতর।
লেবাননের সঙ্গে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১৩১ জন। এদের মধ্যে রয়েছেন সেনা, বেসামরিক নাগরিক এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
এদিকে, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পুনর্বাসন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, এক বছরের যুদ্ধে প্রায় ১৬,০০০ আহত সেনা সদস্য পুনর্বাসনের জন্য চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ১,৫০০ জন দুইবার আহত হয়েছেন। ৭ অক্টোবরের পর থেকে পুনর্বাসন বিভাগের পরিষেবাগ্রহীতার সংখ্যা ২০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে এই বিভাগের আওতায় নিবন্ধিত সামরিক সদস্যের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭৪,০০০।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির চাপ সামলানো এখন ইসরায়েলের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

অর্থনৈতিক ক্ষতি
ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধে ব্যয়ের পরিমাণ ছাড়িয়েছে ১০৬.২ বিলিয়ন শেকেল (২৯.১ বিলিয়ন ডলার)। ইসরায়েলের অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রধান হিসাবরক্ষক ইয়াহালি রোটেনবার্গ জানিয়েছেন, এই ব্যয়ের একটি বড় অংশ পরবর্তীতে পরিশোধ করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে অস্ত্র কেনা, সরবরাহকারীদের অর্থ প্রদান এবং পুনর্গঠনের মতো খরচ। এই ব্যয় মেটাতে ইসরায়েল নজিরবিহীন হারে ঋণ নিয়েছে।
২০২২ সালের শেষে ইসরায়েলের মোট ঋণের পরিমাণ ছিল ১.০৪ ট্রিলিয়ন শেকেল, যা ২০২৪ সালের মাঝামাঝি এসে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১.২৫ ট্রিলিয়ন শেকেলে। ইসরায়েলি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর প্রফেসর আমির ইয়ারন মনে করেন, ২০২৫ সালের মধ্যে এই যুদ্ধের মোট ব্যয় ২৫০ বিলিয়ন শেকেল (৭০ বিলিয়ন ডলার) ছাড়িয়ে যেতে পারে।
যুদ্ধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে অর্থনৈতিক ক্ষতিও কম নয়। হুথি বিদ্রোহীদের হামলায় ইলাত বন্দরের কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। এতে জাহাজ আসা কমে গেছে এবং কর্মীদের বেতনবিহীন ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে, ইসরায়েলের উত্তরাঞ্চল এবং গোলান মালভূমিতে প্রায় ৫৫ হাজার একর বনভূমি, সংরক্ষিত এলাকা, উদ্যান এবং উন্মুক্ত ভূমি পুড়ে গেছে। পর্যটন খাতে ক্ষতি হয়েছে ব্যাপকভাবে। আন্তর্জাতিক পর্যটনে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৮.৭ বিলিয়ন শেকেল (৫.২ বিলিয়ন ডলার) এবং অভ্যন্তরীণ পর্যটনে ক্ষতি হয়েছে ৭৫৬ মিলিয়ন শেকেল (২১০ মিলিয়ন ডলার)। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে এই ক্ষতির প্রভাব বেশি দেখা যাচ্ছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিশাল আর্থিক ক্ষতি ইসরায়েলের অর্থনীতিতে দীর্ঘমেয়াদে বড় প্রভাব ফেলতে পারে।
ইসরায়েলের চলমান যুদ্ধ ও সামরিক সংঘাতের কারণে দেশটি একদিকে যেমন কৌশলগত সাফল্যের দাবি করছে, অন্যদিকে দেশত্যাগের বাড়তি চাপ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই উল্টো অভিবাসন বা নেতিবাচক অভিবাসন ইসরায়েলের জন্য বড় ধাক্কা।
ইসরায়েল বিষয়ক বিশ্লেষক হেলমি মুসা বলেন, ‘ইসরায়েলের গৃহায়ন ও অভিবাসন কর্তৃপক্ষ সাধারণত তাদের হিসাব তৈরি করে যেসব ইসরায়েলি এক বছরের বেশি সময় ধরে দেশ ছেড়ে বাইরে থাকেন। তবে চিকিৎসা বা পড়াশোনার জন্য বাইরে যাওয়া মানুষদের আলাদা বিবেচনা করে। যারা পুরো পরিবার নিয়ে অন্য দেশে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন, তাদেরই এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশত্যাগের ক্ষেত্রে বাড়ি ভাড়া বাতিল, গাড়ি বিক্রি, স্থানীয় চাকরির চুক্তি বাতিল বা জাতীয় বিমা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার মতো বিষয়গুলো বিশ্লেষণ করা হয়। এমনকি অনেক কোম্পানি তাদের প্রধান কার্যালয় বা শাখা ইসরায়েল থেকে সরিয়ে বিদেশে স্থানান্তর করেছে। প্রতিবছরের নেতিবাচক অভিবাসন প্রতিবেদন এসব বিষয় বিশ্লেষণ করেই তৈরি করা হয়। অন্যদিকে, যারা নতুন করে ইসরায়েলে অভিবাসন করেন, তাদের তথ্যও বিশেষভাবে সংরক্ষণ করা হয়।’
হেলমি মুসা মনে করেন, কানাডা বর্তমানে ইসরায়েলি অভিবাসীদের অন্যতম প্রধান গন্তব্যস্থল। পাশাপাশি পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতেও অনেকে ফিরে যাচ্ছেন। বিশেষ করে তারা, যারা পূর্বে ইসরায়েলে এসেছিলেন এবং বর্তমানে তাদের পূর্বের নাগরিকত্ব পুনরুদ্ধার করছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘নেতিবাচক অভিবাসন ইসরায়েলের আদর্শগত ভিত্তির ওপর বড় আঘাত। ইসরায়েলে অভিবাসনকে ‘আলিয়া’ বলা হয়, যার অর্থ হলো পবিত্র যাত্রা বা উন্নয়ন। আর দেশ থেকে চলে যাওয়াকে বলা হয় ‘ইয়েরিদা’, যার অর্থ পতন বা পশ্চাৎপসরণ।’
অভিবাসনের অর্থনৈতিক দিক বিশ্লেষণ করে গবেষক মোহাম্মদ আল-বাহানসি বলেন, ‘যারা ইসরায়েল থেকে অভিবাসন করছেন, তাদের বড় অংশ তরুণ গবেষক বা বিজ্ঞানী। ইসরায়েলে তারা নিজেদের অর্থনৈতিক বা গবেষণা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়নের সুযোগ পাচ্ছেন না। নিরাপত্তার অভাব এবং গাজা যুদ্ধসহ সামরিক অস্থিরতা তাদের অন্য দেশে পাড়ি জমানোর পথে ঠেলে দিচ্ছে। এসব দেশে তাদের গবেষণা ও প্রযুক্তিগত প্রকল্প বাস্তবায়নের সুযোগ রয়েছে এবং স্বপ্ন পূরণের সম্ভাবনাও বেশি। এই সুযোগ দিতে ইসরায়েল ব্যর্থ হয়েছে।’
সূত্র : আল জাজিরা