অ্যারাব রিপোর্টারস ফর ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজম (ARIJ) পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, গাজার ৯২ শতাংশ সাংবাদিক ইসরায়েলি হামলায় তাদের সংবাদ সংগ্রহের জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম হারিয়েছেন। ৯১ শতাংশ সাংবাদিক জানিয়েছেন, তাদের কাছে ফ্ল্যাক জ্যাকেট ও হেলমেটসহ সুরক্ষামূলক সরঞ্জাম নেই, যা তাদের কাজের জন্য অপরিহার্য।
একজন সাংবাদিক বলেন, ‘ মোবাইল ফোন হারিয়ে ফেলার করণে আমি কাজ বন্ধ করে দিয়েছি ।’ আরেকজন জানান, ‘আমার বাড়ি বোমা হামলায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছে। এখন আমি একটি তাঁবুতে বাস করছি। আমার ল্যাপটপও হারিয়েছি, যা আমার আয়ের উৎস ছিল। এখন আমি বেকার।’
৩৮৩ জন সাংবাদিকের ওপর ভিত্তি করে পরিচালিত এই জরিপে দেখা গেছে, ৯৬ শতাংশ সাংবাদিক জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, ৮৮ শতাংশের বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে এবং ৬০ শতাংশ এখন শরণার্থী শিবিরে বাস করছেন। ২৫ অক্টোবর থেকে ৭ নভেম্বরের মধ্যে পরিচালিত এই জরিপে আরও জানা যায়, ৪৯ শতাংশ সাংবাদিক যুদ্ধের সময় তাদের চাকরি হারিয়েছেন এবং ২১ শতাংশ আহত হয়েছেন।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের এক তৃতীয়াংশ জানিয়েছেন, তারা আটবারেরও বেশি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, এবং ১৩ জন জানিয়েছেন, তারা ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন।
একজন সাংবাদিক বলেন, ‘আমার বাড়ি টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। আমার ভাই, স্ত্রী এবং সন্তানরা নিহত হয়েছেন।একমাত্র আমিই এখনও বেঁচে আছি।’
সকল সাংবাদিকই জানিয়েছেন, তারা তাদের কাজ চালিয়ে যেতে সংগ্রাম করছেন, হয়তো উপযুক্ত সরঞ্জামের অভাব, ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যা, অথবা তাদের জীবনযাপনের কঠিন পরিস্থিতির কারণে।
এই পরিস্থিতিতে একজন সাংবাদিক বলেন, ‘আমি কাজ চালিয়ে যেতে আগ্রহ পাচ্ছি বা।’ তবে আরেকজন দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ‘আমি কাজ করার সময় আমার সমস্ত পেশাগত সরঞ্জাম হারিয়েছি, যার মধ্যে ফোন, ল্যাপটপ, ক্যামেরা এবং সোলার পাওয়ার সরঞ্জাম ছিল। তবুও, আমি উত্তর গাজায় অবিচল রয়েছি, কঠিন পরিস্থিতি এবং দৈনন্দিন চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমার সাংবাদিকতার দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছি।’
ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের সিন্ডিকেট জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের গাজায় হামলায় ১৯৫ জন সাংবাদিক নিহত এবং কমপক্ষে ৪০০ জন আহত হয়েছেন।
সূত্র : এআরআইজে