হামাসের সামরিক শাখা কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবায়দাকে লক্ষ্য করে গাজায় বিমান হামলা চালানোর দাবি করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী। খবরটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় ব্যাপক আলোচনা ও প্রতিক্রিয়া।
শনিবার ইসরায়েলের সরকারি সম্প্রচারমাধ্যম ‘কান’ জানায়, বিমানবাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত, দক্ষিণাঞ্চলীয় কমান্ড এবং সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের যৌথ অভিযানে গাজায় এ হামলা চালানো হয়। সেনাবাহিনীর দাবি—অভিযানের মূল লক্ষ্যবস্তু ছিলেন আবু উবায়দা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া
আবু উবায়দাকে টার্গেট করে হামলার খবরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসতে থাকে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া।
কেউ লিখেছেন, আবু উবায়দা শহিদ হলেও তিনি প্রথম নন, শেষও নন। প্রতিরোধ থেমে নেই, বরং এগিয়ে যাচ্ছে।
আবার কেউ অভিযোগ করেছেন, ইসরায়েলি গণমাধ্যম ইচ্ছাকৃতভাবেই আবু উবায়দার নাম বড় করে প্রচার করছে। কারণ তিনি ইতোমধ্যেই আরব জনমনে প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। তাদের মতে, ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যম পুরোপুরি সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার নিয়ন্ত্রণে চলে।
আরও অনেকে একে সরাসরি মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ বলে অভিহিত করেছেন। তাদের দাবি—নেতাদের মৃত্যুর গুজব ছড়িয়ে ফিলিস্তিনি সমাজে বিভ্রান্তি তৈরি করা হয় এবং ভেতরের তথ্য বের করার চেষ্টা চালানো হয়।
অনেকে মনে করছেন, আবু উবায়দাকে টার্গেটের করার ঘোষণা আসলে গাজার পশ্চিমাংশে চালানো হত্যাযজ্ঞ আড়াল করার কৌশল। সেখানে অন্তত ৮ জন শহিদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন ২০ জনের বেশি—যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
কেউ লিখেছেন, প্রতিবারই বলা হয় একজন নেতাকে লক্ষ্য করা হয়েছে, অথচ প্রাণ হারায় সাধারণ মানুষ। মনে হয়, একই সময়ে আবু উবায়দা নাকি একাধিক জায়গায় অবস্থান করছেন!
এর আগেও ইসরায়েলি গণমাধ্যম খান ইউনিসে আবু উবায়দাকে হত্যা করার দাবি তুলেছিল। আজ আবার একই কৌশলে নতুন হত্যাযজ্ঞ আড়াল করার অভিযোগ তুলছে ফিলিস্তিনিরা।
প্রতিরোধ কি থেমে যাবে?
অন্যদিকে, অনেকের মতে, আবু উবায়দা শহিদ হলেও প্রতিরোধ আন্দোলনের মূল কাঠামোতে বড় কোনো পরিবর্তন আসবে না। এর আগেও প্রথম সারির বহু নেতা শহিদ হয়েছেন, তবুও প্রতিরোধ শক্ত অবস্থানে আছে।
তাদের মতে, আবু উবায়দা প্রতীকে পরিণত হলেও তাঁর প্রতি ভালোবাসা এখনো আরব ও মুসলিম বিশ্বে গণআন্দোলনে রূপ নেয়নি। একবার তিনি মুসলিম জনগণকে রাস্তায় নামতে আহ্বান জানিয়েছিলেন, কিন্তু পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়ে যায়।
উল্লেখ্য, আবু উবায়দাকে হত্যার চেষ্টা এবারই প্রথম নয়। ২০০৮ সালের আগ্রাসন, ২০১২ ও ২০১৪ সালের যুদ্ধ, এমনকি সাম্প্রতিক তুফানুল আকসা অভিযানের সময়ও তাঁকে একাধিকবার লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে ইসরায়েল।
সূত্র: আল জাজিরা











