গত চার বছরে আফগানি মুদ্রার মান বিদেশি মুদ্রার তুলনায় –বিশেষত মার্কিন ডলারের বিপরীতে– ২১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানিয়েছে দা আফগানিস্তান ব্যাংক।
ব্যাংক কর্মকর্তাদের মতে, অর্থনীতি স্থিতিশীল রাখতে নেওয়া পদক্ষেপগুলোর মধ্যে রয়েছে আফগানির মান শক্তিশালী করা। ব্যাংকিং খাতের সম্প্রসারণ এবং আর্থিক সহায়তা বৃদ্ধি।
ব্যাংকের মুখপাত্র হাসিবুল্লাহ নূরী জানান, সঠিক মুদ্রানীতি বাস্তবায়নের মাধ্যমে তারা আফগানি টাকার মান ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন এবং বৈদেশিক মুদ্রাবাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা রোধ করা সম্ভব হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, গত এক বছরে আফগানি মুদ্রার মান বিদেশি মুদ্রার বিপরীতে –বিশেষত ডলারের তুলনায়– ০.৭৯ শতাংশ ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। এটি আফগানি মুদ্রার স্থিতিশীলতারই প্রমাণ। আমাদের লক্ষ্য হলো এই ধারা আরও দৃঢ় করা এবং বাজারে হঠাৎ ওঠানামা ঠেকানো।
নূরী জোর দিয়ে বলেন, আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকিং খাতের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। বর্তমানে আফগানিস্তান ব্যাংক প্রায় ২০০ আন্তর্জাতিক ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রেখেছে এবং বৈশ্বিক ব্যাংকিং সহযোগিতা আরও সম্প্রসারণে কাজ করছে। এর ফলে দেশীয় ব্যবসায়ীরা আন্তর্জাতিক লেনদেন আরও সহজে সম্পন্ন করতে পারবেন।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আফগান ব্যাংকিং খাতের ওপর আরোপিত সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে আন্তর্জাতিক ব্যাংকের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা অত্যন্ত জরুরি। তারা মনে করেন, আফগানির মান টিকিয়ে রাখতে বিকল্প আর্থিক ভাণ্ডার বা সমর্থন খোঁজাও সময়ের দাবি।
তবে ব্যবসায়ী ওমিদ হায়দারি অভিযোগ করে বলেন, আফগানিস্তানের বেসরকারি ব্যাংকগুলো ব্যবসায়ীদের যথাযথ সহায়তা দিচ্ছে না। টাকা জমা দেওয়ার পর মাসের পর মাস আটকে রাখা হয়। তিনি ইসলামি ইমারতের নেতৃত্বের কাছে দাবি জানান, যেন একটি সুস্পষ্ট নীতিমালা প্রণয়ন করা হয় এবং বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে এমন চুক্তি করা হয়, যাতে ব্যবসায়ীরা সময়মতো নিজেদের অর্থ তুলতে পারেন।
অর্থনৈতিক বিশ্লেষক আবদুল গফুর নেজামি বলেন, আফগানিস্তান বর্তমানে অর্থনৈতিক পরিবর্তনের এক গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। ইতিমধ্যেই বড় প্রকল্প ও বিনিয়োগ শুরু হয়েছে, যা আফগানি মুদ্রার স্থিতিশীলতাকে আরও শক্তিশালী করবে। পাশাপাশি বিদেশি মুদ্রার বিপরীতে আফগানির মান আরও উন্নত করতে পারবে।
দা আফগানিস্তান ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে ২৬ হাজার মানুষ ক্ষুদ্র আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। আরও ১৬ হাজার মানুষ ব্যাংক খাতের মাধ্যমে আর্থিকভাবে উপকৃত হয়েছে।
এছাড়া, আগের বছরের তুলনায় ব্যাংক খাতের অর্থায়ন ৭১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
সূত্র: তোলো নিউজ











