মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

১১ রোহিঙ্গাকে জোরপূর্বক বাংলাদেশ সীমান্তে ঠেলে দিল  ভারত

১১ রোহিঙ্গাকে জোরপূর্বক বাংলাদেশ সীমান্তে ঠেলে দিল  ভারত
১১ রোহিঙ্গাকে জোরপূর্বক বাংলাদেশ সীমান্তে ঠেলে দিল ভারত। ছবি: এএনএ

ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী কর্তৃপক্ষ গত শুক্রবার সকালে ১১ জন রোহিঙ্গা মুসলিমকে জোর করে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। পরে তাঁদের ভুরুঙ্গামারী সীমান্ত থেকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

ভুরুঙ্গামারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল মাহমুদ জানান, শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে ওই ১১ জনকে আটক করা হয়। তিনি বলেন, ‘তাঁদের পরিচয় শনাক্তকরণ ও আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।’

বিজিবির সূত্রে জানা গেছে, ভারতীয় বাহিনী সীমান্তের ১০১১ নম্বর পিলার দিয়ে রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে পাঠায়। পরে সোনাহাট স্থলবন্দর–কাচাকাটা সড়কের পাশে আমতলী এলাকায় টহলরত বিজিবি সদস্যরা তাঁদের আটক করে।

কুড়িগ্রাম-২২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুবুল হক বলেন, ‘আটককৃতরা সবাই মিয়ানমারের বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিক। তাঁদের ভরুঙ্গামারী থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’

সরকারি তথ্য বলছে, চলতি বছরের ৭ মে থেকে এখন পর্যন্ত ভারতীয় প্রশাসন জোর করে ২ হাজার ৩৭২ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে। তাঁদের মধ্যে ২২৩ জন রোহিঙ্গা মুসলিম, যাঁদের ৫০ জন জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর–এর নিবন্ধিত সদস্য ছিলেন।

এদিকে, মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ৭ মে থেকে ১৫ জুনের মধ্যে কোনো আইনি প্রক্রিয়া ছাড়াই ভারত ১ হাজার ৫০০ জনের বেশি মানুষকে দেশ থেকে বহিষ্কার করেছে। তাঁদের মধ্যে প্রায় ১০০ জন ছিলেন রোহিঙ্গা শরণার্থী।

ভারত সরকার রোহিঙ্গাদের শরণার্থী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া তো দূরের কথা, উগ্র হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির প্রভাবে দেশটির ভেতরে যারা মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের সহায়তা করে, তাদের বিরুদ্ধেও দমন অভিযান চালানো হচ্ছে। এছাড়া ভারত এখনো জাতিসংঘের শরণার্থী সনদে স্বাক্ষর করেনি, যা মানবাধিকারের প্রতি তাদের অবজ্ঞাকেই আরও স্পষ্ট করে তোলে।

বর্তমানে অধিকাংশ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে গাদাগাদি করে থাকা শরণার্থী শিবিরে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে। এরই মধ্যে উগ্র হিন্দুত্ববাদী ভারতের কঠোর নীতির কারণে তাদের অবস্থাও আরও অনিশ্চিত হয়ে উঠছে। যে দেশ একসময় মানবতা ও অহিংসার বুলি আওড়াত, আজ সেই দেশই অসহায় রোহিঙ্গাদের জোর করে সীমান্তে ঠেলে দিয়ে অমানবিকতার নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করছে।