গাজায় মানবিক সহায়তা নিয়ে হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের মিথ্যা ও ভিত্তিহীন অভিযোগ বারবার তুলে ধরায় কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। সংগঠনটির রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ইজ্জত আর রিশক বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইসরায়েলি মিথ্যাচার অবলীলায় পুনরাবৃত্তি করে চলেছেন, আর হামাস তার জবাব দিয়ে যাবে নিরলসভাবে।
রিশক বলেন, ট্রাম্প অভিযোগ করতে ক্লান্ত হন না, আর আমরাও তা খণ্ডন করতে ক্লান্ত হব না।
তিনি অভিযোগ করেন, ট্রাম্পের এসব বক্তব্য পুরোপুরি মিথ্যা ও মনগড়া। এতে আসল অপরাধীদের দায় এড়াতে সাহায্য করা হচ্ছে, উল্টো ভুক্তভোগীদেরই দোষারোপ করা হচ্ছে। তাঁর দাবি, জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে বারবার এসব অভিযোগ খণ্ডিত হয়েছে। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএইডের সাম্প্রতিক এক অভ্যন্তরীণ তদন্তেও হামাসের বিরুদ্ধে মানবিক সহায়তা আত্মসাতের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
রিশক বলেন, গাজায় যে পরিকল্পিত দুর্ভিক্ষ ও গণহত্যা চলছে, তা দখলদার ইসরায়েলি নীতিরই ফল। যুক্তরাষ্ট্র এই দমননীতি ও নিষেধাজ্ঞাকে সরাসরি সমর্থন দিচ্ছে। খাদ্য ও ওষুধকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে—যা সরাসরি দুই মিলিয়নেরও বেশি মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত ইসরায়েলি অবস্থানের প্রতিধ্বনি না করে গাজার পরিস্থিতিকে মানবিক ও আন্তর্জাতিক আইনের চোখে দেখা। এখন সময় হয়েছে অবরোধ ও অনাহারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার—এই অন্যায়ের পক্ষে রাজনৈতিক বা কূটনৈতিকভাবে আর কোনো আড়াল দেওয়া চলবে না।
হামাস নেতা আরও বলেন, গাজায় মানবিক সহায়তা যেন নিরবচ্ছিন্নভাবে প্রবেশ করে এবং তা জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে বিতরণ করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, তথাকথিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ অনেক ক্ষেত্রেই সহায়তা চাওয়াদের জন্য ফাঁদের মতো কাজ করছে।
রিশক যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দূত স্টিভ উইটকোফের সাম্প্রতিক গাজা সফরকে একটি প্রচারণামূলক নাটক বলে আখ্যা দেন। তাঁর ভাষায়, এই সফরের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইসরায়েল-আমেরিকার গাজাবিরোধী ভূমিকা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্ষোভ প্রশমিত করা।
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, গাজার মানবিক সংকট থেকে উত্তরণের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো হামাসের আত্মসমর্পণ এবং জিম্মিদের মুক্তি। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি গাজার জন্য ৬০ মিলিয়ন ডলারের মানবিক সহায়তা দিয়েছে। তাঁর ভাষায়, আমি শুধু চেয়েছি গাজার মানুষ অন্তত খাবারটা পাক। তবে তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, এই সহায়তার কোনো বাস্তব ফল দেখতে পাচ্ছি না।
সূত্র: আরটি