গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চল খান ইউনুসে নতুন করে ছড়িয়ে পড়েছে উত্তেজনা। ইসরায়েলি সেনাদের ওপর একের পর এক হঠাৎ ও পরিকল্পিত হামলায় স্পষ্ট—দখলদার বাহিনী প্রতিরোধ যোদ্ধাদের কৌশলের কাছে দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, খান ইউনুসে টানেল থেকে হঠাৎ বেরিয়ে এসে হামলা চালায় ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা। মুখোমুখি সংঘর্ষে তীব্র গোলাগুলির মধ্যে ইসরায়েলি সেনারা পিছু হটতে বাধ্য হয়। আহত সেনাদের হেলিকপ্টারে সরিয়ে নিতে হয় যুদ্ধক্ষেত্র থেকে।
ইসরায়েলি পত্রিকা ইয়েদিয়োত আহরোনোত জানায়, একদিনেই গাজায় অন্তত পাঁচ সেনা আহত হয়েছে, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছে।
হামাসের সামরিক শাখা কাসসাম ব্রিগেড ও ইসলামিক জিহাদের সামরিক শাখা কুদস ব্রিগেড একযোগে একাধিক স্থানে ইসরায়েলি সামরিক যান ধ্বংসের দাবি করেছে। কোথাও মারকাভা ট্যাংক বিস্ফোরকে উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, আবার কোথাও ডি-৯ বুলডোজার ধ্বংস হয়েছে প্রতিরোধযোদ্ধাদের ফাঁদে।
কাসসামের প্রকাশিত একটি ভিডিও বার্তায় দেখা যায়, তাদের যোদ্ধারা সাহসিকতার সঙ্গে এক ইসরায়েলি সেনাকে আটকের চেষ্টা করছে এবং আরেকজন সেনা ভয় পেয়ে পালিয়ে যাচ্ছে। এই দৃশ্যগুলো প্রমাণ করে, ইসরায়েলি বাহিনীর মনোবলে চিড় ধরেছে।
কুদস ব্রিগেড জানিয়েছে, গাজার বিভিন্ন এলাকায় তারা ট্যাংকবিধ্বংসী বিস্ফোরণ ও মর্টার হামলা চালিয়েছে। এসব হামলার ধরন এবং সময় নির্বাচন স্পষ্ট করে দেয়—প্রতিরোধ যোদ্ধারা যুদ্ধক্ষেত্রে দখলদার বাহিনীর গতিবিধি ও দুর্বলতা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে তবেই আঘাত হানছে।
গেরিলা কৌশলে পাল্টা প্রতিরোধ
সিএনএনের প্রতিবেদনে বলা হয়, হামাস সরাসরি সংঘর্ষের বদলে এখন গেরিলা কৌশলকে প্রাধান্য দিচ্ছে। বেইত হানুনে কাসসাম ব্রিগেডের সাম্প্রতিক হামলা থেকে স্পষ্ট—যুদ্ধ ও অবরোধের মধ্যেও তারা সংগঠিতভাবে এগোচ্ছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সাবেক অপারেশন প্রধান জেনারেল ইসরায়েল জিভ স্বীকার করেছেন, হামাস ইসরায়েলি বাহিনীর দুর্বলতা চিহ্নিত করে পরিকল্পিত আঘাত হানছে।
এদিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ অলমার্ট জানিয়েছেন, পশ্চিম তীরে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় পুলিশ সরাসরি জড়িত, অথচ সেনাবাহিনী নীরব।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর সামরিক অভিযানের বিপরীতে প্রতিরোধযোদ্ধারা এখন সংগঠিত, আত্মবিশ্বাসী ও সাহসী। সংঘর্ষের প্রতিটি পর্বে তারা কৌশলগতভাবে দখলদার বাহিনীকে চাপে ফেলছে, বারবার প্রমাণ করছে—এই যুদ্ধে তারা শুধুই প্রতিরোধ করছে না, নেতৃত্ব দিচ্ছে।
সূত্র: আল জাজিরা