আফগানিস্তানে তথাকথিত ইসলামিক স্টেট (দায়েশ) গোষ্ঠীর কার্যক্রম নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে যে আশঙ্কা ও উদ্বেগ ছড়াচ্ছে, তা সরাসরি নাকচ করে দিয়েছে তালেবান সরকার। ইসলামি ইমারত আফগানিস্তানের উপ-প্রবক্তা মাওলানা হামদুল্লাহ ফতরাত স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন— আফগানিস্তানে দায়েশের কোনো বাস্তব ও সংগঠিত উপস্থিতি নেই।
সম্প্রতি প্রচারিত এক অডিও বার্তায় ফতরাত বলেন, দায়েশ আফগানিস্তানে আর কোনো হুমকি নয়। তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা কার্যত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, এবং তাদের অস্তিত্ব চিহ্নমাত্র মুছে ফেলতে আমিরাতের নিরাপত্তা বাহিনী নিরবচ্ছিন্নভাবে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
তালেবান সরকারের এই বক্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন রাশিয়ার জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের উপ-মহাসচিব ইউরি কোকোভ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আফগানিস্তান থেকে দায়েশের যোদ্ধারা মধ্য এশিয়ার বিভিন্ন প্রজাতন্ত্রে প্রবেশ করতে পারে।
রুশ পক্ষের এই মন্তব্যকে ‘ভিত্তিহীন’ আখ্যা দিয়ে ফতরাত জানান, গত চার বছরে তালেবান কর্তৃপক্ষ দায়েশের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে ধারাবাহিক ও কঠোর অভিযান চালিয়েছে। এতে সংগঠনটির বহু সদস্য নিহত হয়েছে, বাকিরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। তিনি বলেন, এখনো যারা অবশিষ্ট রয়েছে, তাদের চিহ্নিত করে নির্মূল করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে তালেবান।
২০২১ সালের আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের দীর্ঘ যুদ্ধের অবসান ঘটে আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে। এরপর তালেবান সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করলে দেশটির নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দেয়। শঙ্কা ছিল, আফগানিস্তান আবারও জঙ্গিগোষ্ঠীগুলোর নিরাপদ ঘাঁটি হয়ে উঠতে পারে।
তবে তালেবান প্রশাসন বরাবরই এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। উপ-প্রবক্তা ফতরাতও সেই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, আফগানিস্তানের মাটি কোনো বিদেশি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর কার্যকলাপের জন্য ব্যবহার করতে দেওয়া হবে না। দেশের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
আন্তর্জাতিক মহলে যে আশঙ্কা ও সমালোচনা ক্রমেই জোরাল হচ্ছে, তালেবান সরকারের এই বক্তব্য সেই প্রতিক্রিয়ারই জবাব হিসেবে দেখা যাচ্ছে।
সূত্র: এইচ রেডিও











