মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

কাশ্মীর হামলার পর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আশঙ্কা

কাশ্মীর হামলার পর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আশঙ্কা
কাশ্মীর হামলার পর ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের আশঙ্কা। ছবি : আল জাজিরা

কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সাম্প্রতিক ভয়াবহ হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ফের যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সাময়িকী দ্য ইকোনমিস্ট। পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত এই দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কে নতুন করে উত্তেজনার আভাস মিলেছে।

গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা পেহেলগামে চালানো ওই হামলায় বহু মানুষ হতাহত হন। এর জেরে পুরো অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে তীব্র অস্থিরতা।
রয়টার্স জানায়, নিরাপত্তার কারণে দোকানপাট বন্ধ করে দেওয়া হয়, আতঙ্কে পর্যটকরা এলাকা ছাড়তে শুরু করেন, এবং আটকে পড়া পর্যটকদের সরিয়ে নিতে ব্যবস্থা নেওয়া হয় বিশেষ ফ্লাইটের।

হামলার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে নিরাপত্তা বাহিনী প্রায় ১০০ জনকে আটক করেছে। হামলার দায় স্বীকার করেছে ‘ফ্রন্ট অব রেজিস্ট্যান্স’ নামের একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী। তাদের দাবি, কাশ্মীরে নতুন করে ৮৫ হাজার মানুষের পুনর্বাসনের সরকারি উদ্যোগের বিরোধিতা করেই তারা এ হামলা চালিয়েছে।

দ্য ইকোনমিস্ট-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, পেহেলগাম—যে অঞ্চলটি আলপাইন প্রান্তর, সবুজ উপত্যকা ও পাইনবনের জন্য পরিচিত—তা ‘ছোট সুইজারল্যান্ড’ নামে পরিচিত। সহিংসতা হ্রাস পাওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে সেখানে পর্যটকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছিল। কিন্তু এ হামলা পরিস্থিতিকে আবারও অনিশ্চিত করে তুলেছে।

ভারতের সাবেক সেনা ও গোয়েন্দা কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, এই হামলার পেছনে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর হাত রয়েছে। তাঁরা কড়া জবাব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। সরকারের দাবি ছিল, কাশ্মীরে শান্তি ফিরেছে—কিন্তু এই হামলা সেই বক্তব্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

উল্লেখ্য, ১৯৮৯ সাল থেকে কাশ্মীরে চলমান বিদ্রোহে বহু মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। সহিংসতা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কমলেও এই হামলা আবারও নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা সামনে এনেছে।

ভারতীয় কর্মকর্তারা মনে করছেন, হামলাকারীদের মূল লক্ষ্য ছিল পর্যটন খাত ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা। হামলার সময় ভারতের অভ্যন্তরে ও বিদেশে উচ্চপর্যায়ের সফর চলছিল, এবং সামনে ছিল একটি বড় হিন্দু ধর্মীয় উৎসব। ফলে ভারতের কিছু সাবেক সেনা কর্মকর্তা ধারণা করছেন ধর্মীয় পর্যটকরাও ছিল হামলাকারীদের টার্গেট। এর আগে ২০২৪ সালের জুনে হিন্দু তীর্থযাত্রী বহনকারী একটি বাসে হামলায় ৯ জন নিহত হন।

দ্য ইকোনমিস্ট আশঙ্কা করছে, এ ঘটনার জেরে ভারত জনমতের চাপে সামরিক বা কূটনৈতিকভাবে আরও কঠোর অবস্থান নিতে পারে, যার ফলে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক আরও খারাপের দিকে যেতে পারে। ১৯৪৭ সালের পর থেকে দুই দেশ তিনবার যুদ্ধে জড়িয়েছে, যার মধ্যে দুটি কাশ্মীর কেন্দ্রিক। উভয় দেশ পারমাণবিক শক্তিধর হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এ পরিস্থিতিকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে।

সর্বশেষ