সুদানের উত্তর দারফুরের মালহা শহরে র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (RSF)-এর হামলায় অন্তত ৪৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় নিহতদের একটি প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করেছে উত্তর দারফুরের রাজধানী আল-ফাশারের একটি প্রতিরোধ কমিটি। তারা এটিকে ‘গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে। কমিটির তথ্য অনুযায়ী, নিহতদের মধ্যে ১৫ জনের পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
হামলার পর RSF জানিয়েছে, তারা মালহা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। শহরটি আল-ফাশার থেকে প্রায় ২০০ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ি অঞ্চলে অবস্থিত। সংগঠনটির দাবি, এই সংঘর্ষে তাদের বিরোধী পক্ষের ৩৮০ জন সদস্য নিহত হয়েছে।
বর্তমানে দারফুরের বেশিরভাগ এলাকা RSF-এর দখলে থাকলেও তারা এখনো আল-ফাশারের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারেনি। অন্যদিকে, শুক্রবার সুদানের রাজধানী খার্তুমে সেনাবাহিনী প্রেসিডেন্ট প্যালেসের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে RSF।
বিশ্লেষকদের মতে, মালহা শহর সুদান ও লিবিয়ার মধ্যে মরুপথের একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগস্থল। উত্তর দারফুর থেকে সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত উত্তর প্রদেশ পর্যন্ত সরবরাহ লাইন নিশ্চিত করতে এ অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ RSF-এর জন্য কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ।
রাজধানী খার্তুমে RSF-এর বিরুদ্ধে বড় ধরনের অগ্রগতি অর্জন করেছে সুদান সেনাবাহিনী। শুক্রবার তারা প্রেসিডেন্ট প্যালেসসহ একাধিক কৌশলগত স্থাপনার নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছে। সেনাবাহিনীর মুখপাত্র নাবিল আবদুল্লাহ জানিয়েছেন, সংঘর্ষে RSF-এর ১০০ জন সদস্য নিহত হয়েছে এবং খার্তুমের কেন্দ্রীয় অঞ্চল প্রায় ‘RSF-মুক্ত’।
সেনাবাহিনীর পুনরুদ্ধারকৃত এলাকাগুলো হলো জাতীয় গোয়েন্দা দপ্তর, সুদান কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও ব্যাংক অফ সাহেল-সাহারা, নীলাইন বিশ্ববিদ্যালয় ও আরবি বাজার সংলগ্ন অঞ্চল।
সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা তিনটি প্রধান সামরিক ইউনিটের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে, যা তাদের কৌশলগত অবস্থান আরও শক্তিশালী করেছে।
২০২৩ সালের এপ্রিলে সুদান সেনাবাহিনী ও RSF-এর মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত হাজারো মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন এবং ৮০ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। ইউনিসেফ সতর্ক করেছে, সংঘাত চলতে থাকলে সুদান বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ মানবিক সংকটের মুখোমুখি হবে।
সূত্র: আল জাজিরা ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম
