জাতিসংঘের শিশু সংস্থা (ইউনিসেফ) জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক তহবিলে বড় ধরনের ঘাটতির কারণে ২০২৬ সালের মধ্যে প্রায় সাড়ে তিন লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী শিশু স্থায়ীভাবে শিক্ষার সুযোগ হারাতে পারে।
ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী , আন্তর্জাতিক তহবিল কমে গেলে হলে ২০২৬ সালের মধ্যে বিশ্বজুড়ে প্রায় ৬০ লাখ শিশু শিক্ষার সুযোগ হারাতে পারে। এর এক–তৃতীয়াংশ শিশু বর্তমানে মানবিক সংকট–কবলিত এলাকায় বসবাস করছে। তাদের মধ্যেই রয়েছে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া সাড়ে তিন লাখ রোহিঙ্গা শিশু।
ইউনিসেফের বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, ২০২৪ সালের মধ্যে আনুমানিক ২৪ শতাংশ বা ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার কমে যাবে বৈশ্বিক শিক্ষা উন্নয়ন তহবিল। এই ঘাটতির প্রায় ৮০ শতাংশের কারণ যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি ও ফ্রান্সের বাজেট কর্তন।
সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ক্যাথরিন রাসেল বলেন, ‘শিক্ষাখাতে প্রতিটি ডলার কমানো শুধু আর্থিক সিদ্ধান্ত নয়, এটি কোনো শিশুর ভবিষ্যতের ওপর সরাসরি আঘাত। শিক্ষা হলো টিকে থাকার প্রধান ভরসা, বিশেষ করে সংকটময় সময়ে। এটি শিশুদের দারিদ্র্যের শৃঙ্খল ভাঙার সুযোগ দেয় এবং একটি সুরক্ষিত ও উন্নত ভবিষ্যতের পথ তৈরি করে।
ইউনিসেফ জানায়, যেসব দেশে মানবিক সংকট ভয়াবহ, সেসব দেশই সবচেয়ে বেশি বাজেট কাটছাঁটের শিকার হবে। হাইতি, সোমালিয়া ও ফিলিস্তিনের মতো কিছু দেশে জাতীয় শিক্ষা বাজেটের প্রায় ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
কয়েক মাস আগে অর্থের অভাবে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে বেশ কিছু শিক্ষা কেন্দ্র বন্ধ করতে বাধ্য হয় ইউনিসেফ। তবে শরণার্থীরা এসব কেন্দ্র পুনরায় খোলার দাবি জানিয়ে আসছেন। তাঁদের আশঙ্কা, শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হলে সন্তানের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে হারিয়ে যাবে।
২০১৭ সালে মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর পরিচালিত গণহত্যা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে ১০ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা লাখেরও বেশি। ২০২৩ সালের নভেম্বরে মিয়ানমার সেনা ও সন্ত্রাসী আরাকান আর্মির নতুন সংঘাতে আবারও সহিংসতা, বাস্তুচ্যুতি ও জোরপূর্বক নিয়োগের শিকার হয়েছে রোহিঙ্গারা।
সূত্র: এএনএ











