মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ সুদানে পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনায় ইসরায়েল

ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ সুদানে পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনায় ইসরায়েল
ফিলিস্তিনিদের দক্ষিণ সুদানে পাঠানোর পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনায় ইসরায়েল। ছবি: আনাদোলু এজেন্সি

মার্কিন সংবাদ সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস’ (এপি) জানিয়েছে, গাজা উপত্যকার ফিলিস্তিনিদের পূর্ব আফ্রিকার দেশ দক্ষিণ সুদানে পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা করছে ইসরায়েল। যুক্তরাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতায় নেওয়া এই উদ্যোগকে বিশ্লেষকরা ইসরায়েলের দীর্ঘদিনের জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির নীতির অংশ হিসেবে দেখছেন। তবে আন্তর্জাতিক আইন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের আশঙ্কায় এই পরিকল্পনা আরব ও মুসলিম বিশ্বসহ আন্তর্জাতিক মহলে তীব্র নিন্দার মুখে পড়েছে।

এই খবর এমন সময় এসেছে, যখন গত শুক্রবার ইসরায়েলি সরকার ধাপে ধাপে পুরো গাজা দখলের পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছে। প্রথম ধাপ শুরু হবে গাজা শহর থেকে, যেখানে অন্তত ১০ লাখ ফিলিস্তিনি বসবাস করছেন।

ছয়টি সূত্রের বরাত দিয়ে এপি জানিয়েছে, ইসরায়েল ও দক্ষিণ সুদানের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। তবে গৃহযুদ্ধ ও অর্থনৈতিক সংকটে থাকা দক্ষিণ সুদানের সঙ্গে এই আলোচনায় কতটা অগ্রগতি হয়েছে, তা পরিষ্কার নয়।

দক্ষিণ সুদানের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও প্রতিক্রিয়া জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। দক্ষিণ সুদানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রশ্নের উত্তর দেননি। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র শুধু বলেছেন, ব্যক্তিগত কূটনৈতিক আলোচনা নিয়ে তারা মন্তব্য করে না।

এপি আরও জানায়, যদি এই আলোচনা চুক্তিতে রূপ নেয়, তবে দক্ষিণ সুদানের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ হবে। এতে গত ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উত্থাপিত গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি হতে পারে, যদিও পরে তিনি বিষয়টি থেকে সরে আসার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

এর আগে এপি বলেছিল, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্র সুদান, সোমালিয়া এবং সোমালিয়ার বিচ্ছিন্ন অঞ্চল ‘সোমালিল্যান্ড’-এর সঙ্গেও একই ধরনের আলোচনা করেছে। তবে এসব আলোচনার অগ্রগতি সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।

ইসরায়েলের দৈনিক ‘ইদিয়োথ আহরোনোথ’ জানিয়েছে, গাজা থেকে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের গ্রহণের বিষয়ে ইসরায়েল অন্তত পাঁচটি দেশের সঙ্গে আলোচনা করছে, যার একটি দক্ষিণ সুদান। পত্রিকাটি জানায়, গত সপ্তাহে দক্ষিণ সুদানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল সফর করেছেন, তবে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি।

এ ছাড়া ইসরায়েলের চ্যানেল ১২ জানিয়েছে, মোসাদ প্রধান দাভিদ বারনিয়া ওয়াশিংটনে মার্কিন মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের সঙ্গে বৈঠক করে গাজার কয়েক লাখ ফিলিস্তিনিকে লিবিয়াসহ কিছু দেশে পাঠাতে সহায়তা চেয়েছেন। তবে লিবিয়া এ খবর দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করেছে এবং ওয়াশিংটনে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসও তা নাকচ করেছে।

পর্যবেক্ষকদের মতে, ইসরায়েলি গণমাধ্যমে মাঝেমধ্যেই এমন খবর প্রকাশ হয় যে কিছু দেশ গাজার ফিলিস্তিনিদের গ্রহণে রাজি হতে পারে। তবে সংশ্লিষ্ট দেশগুলো দ্রুতই তা অস্বীকার করে। বিশ্লেষকদের ধারণা, এসব খবর ছড়ানোর মূল উদ্দেশ্য হলো এমন একটি ধারণা তৈরি করা যে কিছু দেশ এই আন্তর্জাতিকভাবে নিন্দিত পরিকল্পনায় যুক্ত হতে পারে।

সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি

আরো পড়ুন

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন