মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

লালদিয়া দ্বীপে রোহিঙ্গা জেলের লাশ, অপহৃত আরও তিনজন নিখোঁজ

লালদিয়া দ্বীপে রোহিঙ্গা জেলের লাশ, অপহৃত আরও তিনজন নিখোঁজ
লালদিয়া দ্বীপে রোহিঙ্গা জেলের লাশ, অপহৃত আরও তিনজন নিখোঁজ। ছবি : এএনএ

মিয়ানমার ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী লালদিয়া দ্বীপ থেকে এক রোহিঙ্গা জেলের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সদস্যরা তাঁকে অপহরণের পর হত্যা করেছে। এদিকে এখনো নিখোঁজ রয়েছেন আরও তিনজন রোহিঙ্গা জেলে।

নিহত ব্যক্তির নাম জাফর (৪৬)। তিনি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডুর মিনগালা জি এলাকার থারসি গ্রামের বাসিন্দা। সোমবার সকালে সীমান্তবর্তী নদীতে একটি নৌকার মধ্যে তাঁর মরদেহ পাওয়া যায়। মুখ ও নাক দিয়ে রক্ত বের হচ্ছিল, শরীরজুড়ে ছিল নির্যাতনের স্পষ্ট চিহ্ন। স্থানীয়রা বলছেন, তাঁকে নির্মমভাবে মারধর ও নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২ আগস্ট রাতে জাফরসহ চার রোহিঙ্গা জেলেকে নাফ নদীর মাঝামাঝি লালদিয়া দ্বীপ থেকে ধরে নিয়ে যায় সন্ত্রাসী আরাকান আর্মির সদস্যরা। ওই দ্বীপটি বর্তমানে তাদের নিয়ন্ত্রণে। জেলেরা প্রতিদিন ওই তাদের জন্য কাঁচামাল সরবরাহ করতেন। সেদিন তাঁরা নিয়ে যেতে ভুলে যান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আরাকান আর্মির সদস্যরা তাঁদের মারধর ও নির্যাতন করেন। একপর্যায়ে জাফরকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। বাকি তিনজনের কোনো খোঁজ এখনো মেলেনি।

নিহতের জানাজা শেষে তাঁকে কক্সবাজারের একটি রোহিঙ্গা শিবিরে দাফন করা হয়েছে বলে জানান এক রোহিঙ্গা শরণার্থী।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, আরাকান আর্মির শাসনে রোহিঙ্গারা চরম নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। বাড়িঘর বন্ধ করে দখলে নেওয়া, সম্পদ লুট, পরিবারকে উচ্ছেদ, গ্রামের বাইরে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা—এসব এখন নিত্যদিনের ঘটনা। রোহিঙ্গা গ্রামগুলোর প্রবেশপথে বসানো হয়েছে নিরাপত্তা চৌকি, যাতে কেউ গ্রামের বাইরে চলাচল করতে না পারেন।

২০২৩ সালের নভেম্বরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি। তারা এখন পর্যন্ত ১৭টি শহরের মধ্যে ১৪টির দখল নিয়েছে। এই সংঘাতে আবারও রোহিঙ্গারা পড়েছে চাপে। একদিকে আরাকান আর্মির নির্যাতন, অন্যদিকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর পুরোনো গণহত্যার স্মৃতি। ২০১৭ সালের সেই অভিযানে প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এখন যারা রাখাইনে রয়ে গেছেন, তাঁদের অবস্থাও ক্রমেই শোচনীয় হয়ে উঠছে।

আরো পড়ুন

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন