মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

সুয়াইদার সংকট নিরসনে সরকারের ওপর পূর্ণ দায় চাপাল গোত্রজোট

সুয়াইদার সংকট নিরসনে সরকারের ওপর পূর্ণ দায়িত্ব চাপাল গোত্রজোট
গোত্রজোটের প্রধান শেখ রাকান আল খুদাইরা। ছবি : আল জাজিরা

দক্ষিণ সিরিয়ার সুয়াইদায় চলমান ভয়াবহ সহিংসতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গোত্রজোটের প্রধান শেখ রাকান আল খুদাইর। তাঁর অভিযোগ, দ্রুজ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় নেতা হিকমাত আল হিজরির অনুসারী একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী এলাকায় অমানবিক ও নিষ্ঠুর কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

আল জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শেখ খুদাইর বলেন, ‘সুয়াইদায় যা ঘটছে তা এক কথায় ভয়ংকর। শিশুদের শিরশ্ছেদ করা হচ্ছে, নারীদের ধর্ষণ করা হচ্ছে, আর দুই হাজারের বেশি গোত্রবাসীকে জিম্মি করে রাখা হয়েছে। এসব ঘটনা কোনো সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না।’

তিনি বলেন, সরকারি বাহিনী সুয়াইদা থেকে সরে যাওয়ার পরই হিজরির অনুসারীরা পুরো এলাকা নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। তারপর থেকেই শুরু হয় নিপীড়ন ও হত্যাযজ্ঞ। তাঁর ভাষায়, ‘সরকার পিছু হটার পর আমাদের সন্তানদের হত্যা করা হচ্ছে, আটক রাখা হচ্ছে, নিপীড়ন চালানো হচ্ছে।’

একতরফা নিয়ন্ত্রণে হিজরির বাহিনী

খুদাইরের দাবি, বর্তমানে সুয়াইদায় কেবল হিকমাত হিজরির বাহিনী সক্রিয় রয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে শিশুদের শিরশ্ছেদ ও নারীদের ওপর যৌন সহিংসতার মতো ভয়ংকর অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে।

সরকারি বাহিনী প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে ‘ভুল ও বিপজ্জনক’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই সিদ্ধান্ত গোত্রগুলোকে কার্যত অবরুদ্ধ করে ফেলেছে। রাষ্ট্র যদি নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা নিজেরাই নিজেদের রক্ষা করব।

গোত্রের অভিযান ও সতর্কতা

তিনি জানান, গোত্রপক্ষ থেকে বর্তমানে যে প্রতিরোধ অভিযান পরিচালিত হচ্ছে, তার একমাত্র লক্ষ্য হলো হিজরির গোষ্ঠীর হাতে আটক লোকজনকে মুক্ত করা। তবে তিনি তার অনুসারীদের কড়া নির্দেশ দেন, যাতে সাধারণ দ্রুজ জনগোষ্ঠীর ওপর কোনো আক্রমণ বা নিপীড়নের ঘটনা না ঘটে।

সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি ও শান্তির আহ্বান

শেখ খুদাইর বলেন, সরকার কেবল দর্শক হয়ে থাকতে পারে না। দ্রুজ হোক বা গোত্র রাষ্ট্রের দায়িত্ব সকল নাগরিকের সুরক্ষা নিশ্চিত করা।

শেখ খুদাইরের মতে আটকদের মুক্তি, গোত্রবাসীদের নিজ গ্রামে নিরাপদে ফিরে যাওয়ার নিশ্চয়তা এবং সরকারের পূর্ণ দায়িত্ব গ্রহণ ছাড়া এই পরিস্থিতির সমাধান সম্ভব নয়।

মধ্যপ্রাচ্য

সাক্ষাৎকারের শেষভাগে তিনি দ্রুজ নেতাদের মধ্যে ঐক্যের আহ্বান জানান এবং বলেন, ‘আমরা চাই সুয়াইদা ও আশপাশের অঞ্চল শান্ত হোক। সবার উচিত সহিংসতা পরিহার করে সংলাপ ও সহনশীলতার পথ বেছে নেওয়া।’

সাক্ষাৎকারের শেষে তিনি আরব দেশ ও মুসলিম উম্মাহর প্রতি আহ্বান জানান—তারা যেন এই রক্তপাত বন্ধে সক্রিয় ও কার্যকর ভূমিকা রাখে।

সর্বশেষ