মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

মুহাম্মদ আদ দাইফের নাম দখলদারদের কাছে চিরস্থায়ী দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকবে : আবু উবায়দা

তাঁর জীবন ও শাহাদাত গোটা মুসলিম উম্মাহর জন্য এক অনন্য আদর্শ।
শহিদ মুহাম্মদ আদ দাইফের নাম দখলদারদের কাছে চিরন্তন দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকবে: আবু উবায়দা
শহিদ মুহাম্মদ আদ দাইফের নাম দখলদারদের কাছে চিরন্তন দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকবে: আবু উবায়দা। ছবি : আরটি

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা সংগ্রামের চির উজ্জ্বল নাম শহিদ মুহাম্মদ আদ দাইফ।গতকাল তার শাহাদাত দিবসে তাঁকে স্মরণ করে কাসসাম ব্রিগেডের মুখপাত্র আবু উবায়দা বলেছেন, ‘দখলদার ইসরায়েলিদের জন্য শহিদ দাইফের স্মৃতি চিরস্থায়ী এক দুঃস্বপ্ন হয়ে থাকবে।’

গতকাল অফিসিয়াল টেলিগ্রাম চ্যানেলে একাধিক বার্তায় আবু উবায়দা বলেন, দাইফ ও তাঁর সাথিরা নিজেদের রক্ত দিয়ে ফিলিস্তিন মুক্তির ইতিহাসের শেষ অধ্যায় লিখে গেছেন। তাঁর জীবন ও শাহাদাত গোটা মুসলিম উম্মাহর জন্য এক অনন্য আদর্শ।

আবু উবায়দা বলেন, ৭ অক্টোবরের ‘তুফানুল আকসা’ অভিযানে দখলদার ইসরায়েল তাদের কৌশলগত ক্ষমতা চিরতরে হারিয়েছে। এই অভিযান শুধু প্রতিরোধের মাত্রাই বাড়ায়নি, বরং গোটা মুসলিম বিশ্বের মনোযোগ ফিলিস্তিনমুখী করেছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক মঞ্চেও এই সংকট আবার কেন্দ্রে চলে এসেছে।

তিনি বলেন, এই ঐতিহাসিক অভিযানে দাইফ ও তাঁর সহযোদ্ধারা দখলদারদের ওপর ইতিহাসের সবচেয়ে প্রচণ্ড আঘাত হেনেছেন। শহিদ দাইফের রক্ত মিশে আছে তাঁদের রক্তে, যারা আল-আকসা ও ফিলিস্তিনের জন্য নিজেদের সর্বস্ব উৎসর্গ করেছেন।

দাইফের সহযোদ্ধারা এখনো তাঁর পথ অনুসরণ করে দখলদারদের কৌশলগতভাবে বিপর্যস্ত করছেন। শহিদ দাইফ আজও বিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের জন্য এক উজ্জ্বল অনুপ্রেরণা। বলেন আবু উবাইদা। 

তিনি আরও বলেন, অনেকেই দাইফের চেহারাও দেখেননি, তবু তাঁর নেতৃত্ব ও প্রতিরোধের গল্পে তাঁরা গর্ব অনুভব করেন। প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাঁকে স্মরণ করবে এক মহান নেতা হিসেবে, যিনি দীর্ঘ জিহাদ, আত্মত্যাগ আর গোপন পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে আমাদের হৃদয়ে অমর হয়ে আছেন।

হামাসের পক্ষ থেকেও শহিদ দাইফকে স্মরণ করে জানানো হয়েছে, তিনি ছিলেন কাসসাম ব্রিগেডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। এই সংগঠনকে আধুনিক যুগের অন্যতম শক্তিশালী প্রতিরোধ বাহিনী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। দাইফের রেখে যাওয়া সংগ্রামী জীবন ও প্রতিরোধের চেতনা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক অমূল্য সম্পদ হয়ে থাকবে।

তাঁর দীর্ঘ তিন দশকের প্রতিরোধ-জীবন ছিল এক ব্যতিক্রমধর্মী সংগ্রাম। দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে বারবার অপারেশনে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। তাঁর নাম বহুদিন ধরেই দখলদারদের কাছে আতঙ্ক হয়ে ছিল।

চলতি বছরের ৩০ জানুয়ারি আবু উবায়দা ঘোষণা করেন, এক ইসরায়েলি হামলায় মুহাম্মদ আদ দাইফ শহিদ হয়েছেন। ওই হামলায় আরও শহিদ হন তাঁর ডেপুটি মারওয়ান ঈসা, অস্ত্র ও সরঞ্জাম প্রধান গাজী আবু তামা, মানবসম্পদ প্রধান রায়েদ সাবিত এবং খান ইউনুসের কমান্ডার রাফি সালামা।

এরপর ১৩ জুলাই ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান গাজার খান ইউনুসের আল-মাওয়াসি এলাকায় একাধিক বিমান হামলা চালায়। ইসরায়েল দাবি করে, ওই অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল মুহাম্মদ আদ দাইফকে টার্গেট করা।

এর আগেই গত সপ্তাহে আবু উবাইদা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, গাজার উত্তরে হোক কিংবা দক্ষিণে—প্রতিদিন দখলদারদের নতুন করে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তিনি জানান, খুব শিগগিরই গাজায় ইসরায়েলি সেনাদের বন্দি করা হতে পারে।

আবু উবায়দা আরও বলেন, নেতানিয়াহু যদি তাঁর বাহিনীকে গাজায় রেখে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন, তবে সেটাই হবে তাঁর সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক ভুল।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের সামরিক শাখা কাসসাম ব্রিগেড ‘তুফানুল আকসা’ নামে এক বিস্ময়কর হামলা চালায়। গাজার সীমান্তবর্তী ইসরায়েলি ঘাঁটি ও বসতিতে চালানো সেই অভিযানে শতাধিক ইসরায়েলি সেনা নিহত হয় এবং অন্তত ২৪০ জনকে বন্দি করা হয়। ওই হামলার মধ্য দিয়েই শুরু হয় ইসরায়েল-ফিলিস্তিন চলমান রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ।

সর্বশেষ