মিয়ানমারের আরাকান রাজ্যের বুথিডাং শহরের ‘ও হলা ফাই’ গ্রামে একটি মসজিদকে সামরিক দপ্তরে রূপান্তর করেছে সন্ত্রাসী আরাকান আর্মি। স্থানীয় সূত্রগুলোর মতে, মসজিদের ভেতরে একটি ছোট আটক কেন্দ্রও স্থাপন করা হয়েছে।
আরাকান নিউজ এজেন্সিকে সূত্র জানিয়েছে, আরাকান আর্মির একজন আঞ্চলিক কর্মকর্তা স্থায়ীভাবে ওই মসজিদের ভেতর থেকেই কাজ করছেন, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ও জেনেভা কনভেনশনের স্পষ্ট লঙ্ঘন।
এদিকে ২৯ জুন এক বিবৃতিতে ‘রোহিঙ্গা ল্যাবরেটরিজ’ জানিয়েছে, আরাকান সেনাবাহিনী একই এলাকার ‘রুট নিউ টাউং’ গ্রামে আরও ৪টি মসজিদ দখল করেছে এবং সেগুলো বর্তমানে নতুন সদস্য নিয়োগের কেন্দ্রীয় ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করছে।
রোহিঙ্গা ল্যাবরেটরিজের পরিচালক মোহাম্মদ সেলিম বলেছেন, এসব ঘটনায় পবিত্র স্থানগুলোকে ইচ্ছাকৃতভাবে অপবিত্র করা হচ্ছে। তিনি জানান, মসজিদগুলোর ভেতরে পুরুষ ও নারী অবস্থান করছে, মদপান করছে এবং সেখানে পার্টিও আয়োজন করা হচ্ছে বলে বিভিন্ন প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে।
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের কাছে মসজিদ শুধু এবাদতের স্থান নয়, বরং এটি তাদের পরিচয় ও সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতীক। অনেক সময় এসব মসজিদ সাধারণ মানুষের ঘরের চেয়েও ভালো অবস্থায় থাকে। ফলে এসব মসজিদকে সামরিক স্থাপনায় রূপান্তর করাটা আরও বিপজ্জনক ও উদ্বেগজনক।
তিনি বলেন, এসব কার্যকলাপ ১৯৪৯ সালের জেনেভা কনভেনশন ও ১৯৭৭ সালের প্রথম অতিরিক্ত প্রোটোকলের (ধারা ৫৩) স্পষ্ট লঙ্ঘন। পাশাপাশি, ১৯৫৪ সালের হেগ কনভেনশনও লঙ্ঘিত হয়েছে, যেখানে সাংস্কৃতিক সম্পত্তির সুরক্ষার কথা বলা হয়েছে এবং ধর্মীয় স্থাপনাগুলোকে সামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার বা সশস্ত্র সংঘাতে কাজে লাগানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এর আগে বুথিডাং শহরের ‘রুট নিউ টাউং’ গ্রামে রোহিঙ্গা মুসলমানদের এবাদতের জন্য নির্ধারিত চারটি পরিত্যক্ত মসজিদকে আরাকান আর্মি নতুন যোদ্ধা নিয়োগের কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করে।
সূত্র : এএনএ