তুরস্কে দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে চলা সশস্ত্র বিদ্রোহের অবসান ঘটিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে)। সংগঠনটি আনুষ্ঠানিকভাবে নিজেদের ভেঙে ফেলার এবং সব ধরনের সশস্ত্র কার্যক্রম স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে।
তুরস্কের সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত পিকেকে-র ১২তম জাতীয় সম্মেলনের শেষে এই ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দলটির ঘনিষ্ঠ ‘ফুরাত’ বার্তা সংস্থার বরাতে জানানো হয়, পিকেকে তাদের সাংগঠনিক কাঠামো বিলুপ্ত করছে এবং তাদের নামে পরিচালিত সব কার্যক্রম ও সশস্ত্র লড়াই বন্ধ করে দিচ্ছে।
‘ফুরাত’ জানায়, পিকেকে বিশ্বাস করে তারা তাদের ‘ঐতিহাসিক দায়িত্ব’ ইতোমধ্যে পালন করেছে। এখন কুর্দি রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর দায়িত্ব থাকবে কুর্দি জাতিসত্তার গণতান্ত্রিক বিকাশ ও একটি সমৃদ্ধ কুর্দি সমাজ গঠনের।
তারা আরও উল্লেখ করেছে, কুর্দিদের সঙ্গে তুরস্ক সরকারের সম্পর্ক নতুন ভিত্তিতে গড়ে তোলার সময় এসেছে।
এই ঘোষণার পর একে পার্টির মুখপাত্র ওমর চেলিক বলেন, পিকেকে যদি সত্যিই অস্ত্র ফেলে দেয় এবং তাদের সব শাখা ও অবৈধ কাঠামো বিলুপ্ত করে, তবে এটি হবে একটি বড় মাইলফলক।’ তিনি আরও জানান, রাষ্ট্রপতি এরদোয়ান এই প্রক্রিয়ার সব ধাপে নজর রাখছেন এবং সরকার বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
জানা গেছে, ৫ থেকে ৭ মে ইরাকের উত্তরাঞ্চলে অনুষ্ঠিত সম্মেলনেই এই সিদ্ধান্ত আসে। সম্মেলনটি আহ্বান করেছিলেন পিকেকে নেতা আবদুল্লাহ ওজালান, যিনি গত ২৬ বছর ধরে তুরস্কে কারাবন্দি।
এর আগে, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি ওজালান দলটিকে অস্ত্র পরিত্যাগের আহ্বান জানান। ১ মার্চ পিকেকে নেতৃত্ব তাঁর ডাকে সাড়া দেয় এবং ৪০ বছরের রক্তক্ষয়ী সংঘাতের অবসান ঘটানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এই দীর্ঘ সংঘাতে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৪০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
উল্লেখ্য, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন পিকেকে-কে ‘সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। তবে সংগঠনটি ইতোমধ্যেই যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা