মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

পাকিস্তানের হাতে ধ্বংস ইসরায়েলি প্রযুক্তির ২৫ ভারতীয় ড্রোন

পাক-ভারত সীমান্তে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যেই পাকিস্তান সেনাবাহিনী দাবি করেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের পাঠানো ‘ইসরায়েলি প্রযুক্তি-ভিত্তিক’ ২৫টি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে। সেনাবাহিনীর ভাষ্য, বুধবার সন্ধ্যার পর থেকেই এসব ড্রোন পাকিস্তানের বিভিন্ন আকাশসীমায় অনুপ্রবেশ করে।

বৃহস্পতিবার সকালে দেওয়া এক বিবৃতিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী জানায়, ড্রোনগুলো প্রতিহত করা হয়েছে যৌথভাবে প্রযুক্তিগত এবং সামরিক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে। প্রথমে জানানো হয়েছিল, ১২টি ড্রোন ভূপাতিত হয়েছে। সেই ঘটনায় একজন বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং চারজন সেনা সদস্য আহত হন।

সেনাবাহিনীর মুখপাত্র মেজর জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, ‘গত রাতে ভারত ফের আক্রমণাত্মক আচরণ করে একাধিক ড্রোন পাঠিয়েছে। এর একটি লাহোরের কাছে একটি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানে।’

স্থানীয় সংবাদমাধ্যম জিও টিভি ও বার্তা সংস্থা রয়টার্সের একজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকালে লাহোরে এক তীব্র বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। বিস্ফোরণের উৎস সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

লাহোরের ওয়ালটন আবাসিক এলাকার কাছে একটি ড্রোন গুলি করে নামানোর তথ্য দিয়েছেন স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ রিজওয়ান। এই এলাকায় গুরুত্বপূর্ণ সামরিক স্থাপনাও রয়েছে। এ ছাড়া পাঞ্জাবের আরও দুটি শহরে আরও দুটি ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।

ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা পাকিস্তানে ‘সন্ত্রাসবাদী অবকাঠামো’ লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে। ভারতের দাবি, কাশ্মীরে হিন্দু তীর্থযাত্রীদের ওপর সাম্প্রতিক হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার প্রতিশোধেই এ অভিযান চালানো হয়।

পাকিস্তান এই অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে এবং পাল্টা জবাব দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। তারা দাবি করেছে, এ পর্যন্ত ৫টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছে। তবে চীনের বেইজিংয়ে অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস এই দাবিকে ‘ভুল তথ্য’ বলে অভিহিত করেছে।

পাকিস্তানের তথ্যমতে, ভারতীয় হামলায় এখন পর্যন্ত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত ও প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে, পাকিস্তানের পাল্টা হামলায় ১৩ জন ভারতীয় বেসামরিক নাগরিক নিহত এবং আরও ৪৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারতীয় বাহিনী।

ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতের বেলা সীমান্তে গোলাগুলির তীব্রতা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে।

এদিকে পাকিস্তানের বড় শহরগুলোয় জনজীবন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠলেও সীমান্তবর্তী পাঞ্জাব প্রদেশে এখনো জরুরি পরিষেবাগুলো সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। স্কুলগুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি ফিরলেও হাসপাতাল ও সিভিল ডিফেন্স ইউনিটগুলো আগের মতোই প্রস্তুত রয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে নিউইয়র্ক টাইমস–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মদ আসিফ বলেন, ‘উত্তেজনা প্রশমনের জন্য আমরা প্রস্তুত। তবে প্রয়োজনে জনগণ ও ভূখণ্ড রক্ষায় সব রকম পদক্ষেপ নিতে আমরা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।’

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা