জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক ভয়াবহ হামলায় অন্তত ২৫ জন পর্যটক ও একজন স্থানীয় বাসিন্দা নিহত হওয়ার পর ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও হয়রানির ঘটনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে।
চণ্ডীগড়ে এক কাশ্মীরি মুসলিম ছাত্রী স্থানীয়দের হয়রানির শিকার হয়ে বাড়ি ফেরার জন্য জরুরি সাহায্য চাইতে বাধ্য হন। অভিযোগ উঠেছে, এক ট্যাক্সিচালক তাঁকে এবং আরও কয়েকজন যাত্রীকে জোর করে গাড়ি থেকে নামিয়ে দিয়ে হামলা চালান।
কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন জম্মু ও কাশ্মীর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন (JKSA) জানিয়েছে, হামলার ঘটনার পর উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ এবং চণ্ডীগড়সহ একাধিক রাজ্যে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। অনেক জায়গায় শিক্ষার্থীদের হোস্টেল বা ভাড়া বাসা ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। বাড়ির মালিকরা ‘নিরাপত্তার অজুহাতে’ তাদের বাসস্থান ত্যাগের নির্দেশ দিচ্ছেন।
উত্তরাখণ্ডের দেরাদুনে ‘হিন্দু রক্ষা দল’ নামের একটি উগ্র সংগঠন প্রকাশ্যে কাশ্মীরি মুসলিম শিক্ষার্থীদের প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে ভিডিও বার্তা ছড়িয়েছে। আতঙ্কে অনেক শিক্ষার্থী বিমানবন্দরের দিকে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। বিভিন্ন স্থানে উগ্রপন্থীরা কাশ্মীরিদের ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে তাদের ঘর ছাড়তে চাপ সৃষ্টি করছে।
JKSA এখন পর্যন্ত সাতটি নির্যাতনের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে। সংগঠনটি এক চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে হামলার নিন্দা জানিয়ে নিরপরাধ শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে চলমান বৈষম্য ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছে। তারা চার দফা কর্মপরিকল্পনা পেশ করেছে—কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে জাতীয় পর্যায়ে নির্দেশিকা জারি, ঘৃণামূলক অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা, অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য একটি হেল্পলাইন চালু এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সহনশীলতার পরিবেশ তৈরির আহ্বান।
সংগঠনটি শিক্ষার্থীদের ঘর থেকে অপ্রয়োজনে বের না হতে, উত্তেজক পোস্ট না করতে এবং সর্বোচ্চ শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
সূত্র: এম এম