ইয়েমেনে নতুন করে বিমান হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। শুক্রবার দেশটির রাজধানী সানা, পাশাপাশি উত্তরের আল-জাওফ ও সা’দা প্রদেশে একযোগে হামলা চালানো হয়। হুথি গোষ্ঠী আনসারুল্লাহ জানিয়েছে, এর আগে চালানো এক হামলায় ৮০ জন ইয়েমেনি নিহত হওয়ার পরই এই নতুন হামলা হলো।
ইয়েমেনের স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, রাজধানীর সা’বা জেলায় হাফা এলাকায় একাধিক হামলা চালানো হয়েছে। একই সঙ্গে সানার বনি হাশিশ এলাকায় ছয়টি পৃথক হামলা হয়।
পরে ইয়েমেনের আল-মাসিরা টেলিভিশনের খবরে বলা হয়, আল-জাওফ প্রদেশের বার্ত আল আনান ও খাব ওয়াশ শাফ এলাকায় চারটি এবং সা’দা প্রদেশে আরও তিনটি হামলা চালানো হয়েছে। তবে হামলাগুলোর নির্দিষ্ট লক্ষ্যবস্তু কী ছিল এবং এতে কেউ হতাহত হয়েছে কি না—সে বিষয়ে কিছু জানায়নি চ্যানেলটি।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইয়েমেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় হুদাইদা প্রদেশের রাস ইসা বন্দরে মার্কিন বাহিনী বিমান হামলা চালায়। ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এতে অন্তত ৮০ জন বন্দরকর্মী, কর্মকর্তা ও উদ্ধারকর্মী শহীদ হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও ১৫০ জন। তবে এই সংখ্যা এখনো চূড়ান্ত নয়।
এর আগে গত ১৫ মার্চ আনসারুল্লাহ আন্দোলনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, “লোহিত সাগর ও অ্যাডেন উপসাগরের নৌপথে হামলার হুমকি বন্ধ এবং দখলদার ইসরায়েলে হামলা রোধ করতেই এই পদক্ষেপ।” তিনি হুথি আন্দোলনকে “মারাত্মক শক্তি” ব্যবহারের হুমকি দিয়ে “পুরোপুরি নির্মূল” করার ঘোষণা দেন।
লোহিত সাগরে হুথিদের হামলায় ইতোমধ্যে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলারের বৈশ্বিক অর্থনৈতিক ক্ষতি হয়েছে। বেড়েছে সমুদ্রপথে বিমা ব্যয়। এতে বহু আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানি জাহাজ ঘুরিয়ে ‘কেপ অফ গুড হোপ’ হয়ে পণ্য পরিবহন শুরু করেছে, যার ফলে সময় ও খরচ – উভয়ই বেড়ে গেছে।
১৫ মার্চ থেকে শুরু হওয়া মার্কিন বিমান হামলায় এ পর্যন্ত ইয়েমেনে ১২৫ জন বেসামরিক নাগরিক শহীদ হয়েছেন এবং আহত হয়েছেন ২৫৬ জন। তাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে ইয়েমেনি কর্তৃপক্ষ।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ইয়েমেনের সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে “বড় ধরনের হামলা” চালাচ্ছে। তবে ট্রাম্পের হুমকি উপেক্ষা করে হুথি আন্দোলন আবারও দখলদার ইসরায়েলের অভ্যন্তরে এবং তার দিকে যাত্রারত জাহাজে হামলা শুরু করেছে। ১৮ মার্চ থেকে সন্ত্রাসী ইজরায়েলের গাজায় ফের গণহত্যা অভিযান শুরু করার পরই মূলত এই হামলা শুরু হয়।
সূত্র: কুদস নিউজ