মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা

মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

যুদ্ধবিরতির শর্তে অস্ত্র হস্তান্তর, সাফ প্রত্যাখ্যান হামাসের

যুদ্ধবিরতির শর্তে অস্ত্র হস্তান্তর, সাফ প্রত্যাখ্যান হামাসের
যুদ্ধবিরতির শর্তে অস্ত্র হস্তান্তর, সাফ প্রত্যাখ্যান হামাসের। ছবি : আল জাজিরা

মিসরের পক্ষ থেকে যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, তাতে প্রতিরোধের অস্ত্র জমা দেওয়ার স্পষ্ট উল্লেখ থাকায় তা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ সংগঠন হামাস।

আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হামাসের এক শীর্ষ নেতা বলেন, ‘মিসরের প্রস্তাবে ৪৫ দিনের একটি সাময়িক যুদ্ধবিরতির কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, চুক্তির প্রথম সপ্তাহেই ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি থাকা ফিলিস্তিনিদের অর্ধেককে মুক্তি দেওয়া হবে। সেইসঙ্গে খাদ্য ও আশ্রয়সামগ্রী গাজায় প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হবে।’

তিনি আরও জানান, ‘আমাদের আলোচক দল বিস্মিত হয়েছে দেখে যে, প্রস্তাবে স্পষ্টভাবে প্রতিরোধের অস্ত্র জমা দেওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।’

এ প্রসঙ্গে হামাসের রাজনৈতিক শাখার আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান সামি আবু জুহরি স্পষ্ট বলেন, ‘প্রতিরোধ বাহিনীর অস্ত্র নিয়ে কোনো আলোচনা হবে না। এটা কখনোই বাস্তবায়নযোগ্য নয়। যতদিন দখলদার থাকবে, ততদিন প্রতিরোধ বাহিনীর অস্ত্রও থাকবে। এ অস্ত্র ফিলিস্তিনি জনগণ ও তাদের অধিকার রক্ষার জন্য অত্যাবশ্যক।’

আবু জুহরি আরও বলেন, ‘হামাস এমন সব প্রস্তাবের প্রতি উন্মুক্ত, যেগুলো ফিলিস্তিনি জনগণের কষ্ট লাঘবে সহায়ক হতে পারে। তবে নেতানিয়াহু এমন সব শর্ত দিচ্ছেন, যা আদতে আত্মসমর্পণের পথে নিয়ে যায়। তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে যুদ্ধবিরতির পথ রুদ্ধ করছেন।’

তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘ইসরায়েলের সর্বশেষ প্রস্তাবে পূর্ণ যুদ্ধবিরতির কোনো নিশ্চয়তা নেই। তারা কেবল তাদের বন্দিদের ফেরত চাইছে, অথচ পাল্টা কোনো প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে না।’

হামাসের অবস্থান পরিষ্কার—তারা সব ইসরায়েলি বন্দিকে একসঙ্গে মুক্তি দিতে প্রস্তুত, তবে শর্ত একটাই গাজা থেকে দখলদার বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং স্থায়ী যুদ্ধবিরতি।

হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সাবেক প্রধান ইসমাইল হানিয়ার উপদেষ্টা তাহের আল-নুনো সোমবার বলেন, ‘আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত—যদি যুদ্ধ থামে এবং দখলদার বাহিনী গাজা ত্যাগ করে, তাহলে সব বন্দিকে মুক্তি দিতে রাজি আছি।’

এর আগে রবিবার কায়রোতে হামাসের প্রতিনিধি দল, যার নেতৃত্বে ছিলেন গাজা শাখার প্রধান খলিল আল-হাইয়া, মিসর ও কাতারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেন। এই বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে যুদ্ধবিরতির একটি সমাধানে পৌঁছানো।

তাহের আল-নুনো বলেন, ‘আমরা গঠনমূলক একটি বন্দিবিনিময় চুক্তির পক্ষে। কিন্তু শর্ত হলো—ইসরায়েলকে আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে, গাজা থেকে সম্পূর্ণভাবে সরে যেতে হবে এবং মানবিক সহায়তার পথ উন্মুক্ত করতে হবে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘বন্দির সংখ্যা কোনো বড় বিষয় নয়। আসল সমস্যা হলো—ইসরায়েল তাদের প্রতিশ্রুতি থেকে পিছিয়ে যাচ্ছে, যুদ্ধবিরতির পথ রুদ্ধ করছে এবং আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে।’

মধ্যপ্রাচ্য পত্রিকা