চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৩৪ জন বেসামরিক নাগরিক। এসব ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ১৪০ জন। হতাহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছেন।
সিরিয়ান সিভিল ডিফেন্স, যা হোয়াইট হেলমেটস নামেও পরিচিত, এক বিবৃতিতে জানায়, জানুয়ারি থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত তারা মোট ২ হাজার ২৬১টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাড়া দিয়েছে। সংস্থাটি গত মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) এসব তথ্য জানায়।
বিবৃতিতে জানানো হয়, নিহতদের মধ্যে ১৩ জন শিশু এবং ছয়জন নারী রয়েছেন। আহতদের মধ্যে রয়েছে ৩৬ জন শিশু ও ৪৫ জন নারী, যাঁদের বেশির ভাগই দগ্ধ হয়েছেন বা শ্বাসনালির মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
হোয়াইট হেলমেটস আরও জানায়, সর্বশেষ ৪৮ ঘণ্টায় তারা দেশজুড়ে ১০টির বেশি অগ্নিকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। তবে এই সময়ের মধ্যে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
তবে ১৯ মার্চ একদিনেই সিরিয়ায় নয়টি অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনা ঘটে। আলেপ্পোর আল-সুকারি এলাকায় একটি বাড়িতে আগুনে পুড়ে মারা যান ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি। একই দিনে হিমস প্রদেশের রাস্তান এলাকায় একটি খামারে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হন দুই নারীসহ তিনজন।
অন্যদিকে, দামেস্কের বাব তুমা এলাকার তাহরির স্কোয়ারের একটি অ্যাপার্টমেন্টে আগুন লাগলে দুজন শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হন।
এছাড়া আলেপ্পোর সালাহউদ্দিন এলাকার একটি বহুতল ভবনের ফাঁকা জায়গায়, ইদলিবে একটি বাড়ির বারান্দায়, আলেপ্পোর পশ্চিমাঞ্চলের আতারেব শহরে একটি গাড়িতে এবং ইদলিবের গ্রাম ‘আইন শিব’-এ একটি কাঠের গুদামে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এছাড়া দামেস্কের উপকণ্ঠ হামা এলাকায় গাছপালাতেও আগুন লাগে।
দোমা শহরে জ্বালানিবাহী একটি ট্যাংকারে অগ্নিকাণ্ডে একজন শিশু ও একজন পুরুষ আহত হন। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, মসরাবা সেতুর কাছে একটি গুদামে ট্যাংকার থেকে জ্বালানি মজুতের সময় আগুন ধরে যায়। এতে আশপাশের বেশ কয়েকটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং একজন ব্যক্তি আহত হন।
এর আগে, ১৩ মার্চ একদিনে ২১টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সাড়া দেয় হোয়াইট হেলমেটস। তবে ওইসব ঘটনায় কেবল আর্থিক ক্ষতির কথা জানা গেছে।
একই মাসের ৪ ও ৫ তারিখে লাতাকিয়া ও তারতুস প্রদেশে আরও ২০টি অগ্নিকাণ্ড ঘটে। দুর্গম পাহাড়ি পথ ও প্রবল বাতাসের কারণে সেখানে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং দমকল বাহিনীর কাজে বিঘ্ন ঘটে।
এদিকে, তৎকালীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কৃষিমন্ত্রী মোহাম্মদ তাহা আল-আহমেদ অভিযোগ করেন, উপকূলীয় অঞ্চলের এসব অগ্নিকাণ্ড পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। তাঁর দাবি, সাবেক শাসকগোষ্ঠীর দুষ্কৃতিকারীরা জনমনে আতঙ্ক ছড়ানো ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করার উদ্দেশ্যে এসব আগুন লাগিয়ে থাকতে পারে।
সূত্র: ইনাব বালাদি