ভারতের রাজধানী দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণের ঘটনায় দখলকৃত জম্মু ও কাশ্মীরের চার বাসিন্দাকে আটক করেছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। মানবাধিকার পর্যবেক্ষকদের ভাষায়, এটি নয়াদিল্লির বহু পুরোনো কৌশলেরই অংশ, কাশ্মীরিদের দায়ী করে তাদের স্বাধীনতার আন্দোলনকে কলঙ্কিত করা এবং পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়ানোর অজুহাত তৈরি করা।
কাশ্মীর মিডিয়া সার্ভিস (কেএমএস) জানিয়েছে, আটক ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা চিকিৎসক উমর নবির দুই ভাই। কর্মকর্তাদের দাবি, নবিই সেই হুন্ডাই আই–২০ গাড়িটি চালাচ্ছিলেন, যা সোমবার সন্ধ্যায় লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরিত হয়।

ভারত দাবি করেছে, ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত সন্দেহে মোট আটজনকে আটক করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে তিনজন চিকিৎসক। কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, তাঁদের কাছ থেকে প্রায় দুই হাজার ৯০০ কেজি উপকরণ উদ্ধার করা হয়েছে, যা নাকি তাৎক্ষণিক বিস্ফোরক যন্ত্র (আইইডি) তৈরিতে ব্যবহারের উপযোগী।
আটকদের মধ্যে রয়েছেন দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা ডা. মুজাম্মিল আহমদ, যিনি তিন বছর ধরে আল ফালাহ বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত। আটক হয়েছেন উত্তর প্রদেশের নারী চিকিৎসক শাহিন শাহিদও। বিস্ফোরণে ব্যবহৃত গাড়ির মালিকানা ঘিরেও দক্ষিণ কাশ্মীরে অভিযান চালানো হয়েছে। পুলওয়ামার আমির রশিদ, যার পরিচয় ব্যবহার করে গাড়িটি কেনা হয়েছে বলে দাবি, তাকেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
মানবাধিকার কর্মী ও স্থানীয় বিশ্লেষকদের মতে, এ ঘটনাও ভারতের পুরোনো কৌশলেরই পুনরাবৃত্তি। এক স্থানীয় বিশ্লেষক বলেন, ‘দিল্লি বা ভারতের অন্য কোনো স্থানে হামলার সঙ্গে কাশ্মীরিদের যুক্ত দেখিয়ে ভারত কাশ্মীরের স্বাধীনতা আন্দোলনের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চায়। দমনপীড়ন বাড়ানোর অজুহাত তৈরি এবং পাকিস্তানের সঙ্গে বৈরিতা টিকিয়ে রাখতেই এমন ফলস ফ্লাগ অভিযান চালানো হয়।’
তাঁদের মতে, কাশ্মীরিদের মধ্যে ভয়-আতঙ্ক ছড়িয়ে ভারতীয় দখলদারিত্বকে আরও শক্ত করা এবং জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী কাশ্মীর সংকটের শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথকে জটিল করে তুলতেই হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকার এ ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে।
সূত্র: কাশ্মীর মিডিয়া সার্ভিস










