মধ্যপ্রাচ্য অর্ডার করতে ক্লিক করুন

আরাকানে মাইন বিস্ফোরণে নয় মাসে নিহত ১৭, আহত ৭২

আরাকানে মাইন বিস্ফোরণে নয় মাসে নিহত ১৭, আহত ৭২ জন

মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় আরাকান (রাখাইন) রাজ্যে গত নয় মাসে ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণে ১৭ জন নিহত ও নারী–শিশুসহ অন্তত ৭২ জন আহত হয়েছেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটেছে রাজ্যের বিভিন্ন শহর ও গ্রামে—এ তথ্য দিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম নারিনজারা নিউজ।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, জানুয়ারিতে ২ জন নিহত ও ২ জন আহত হন। ফেব্রুয়ারিতে ৮ জনের মৃত্যু ও ১৯ জন আহত হন। মার্চে ১ জন নিহত ও ২০ জন আহত হন। এপ্রিল ও মে মাসে ২ জন করে নিহত হন, আহত হন যথাক্রমে ১২ ও ১০ জন। জুনে ১ জন নিহত ও ৩ জন আহত হন, জুলাইয়ে কেবল ১ জন আহত হন। আগস্টে ১ জন নিহত ও ৪ জন আহত হন, আর সেপ্টেম্বরে কোনো মৃত্যু না হলেও ১ জন আহত হন।

ঘটনাগুলো ঘটেছে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায়—মংডু, গওয়া, ম্রউক-উ, টাউংগুপ, আন, পাউকতাউ, মিনবিয়া, কিয়াউকতাউ, থানদুই, মেপন ও কিয়াউকফিউতে।

কমিউনিটি রেজিলিয়েন্স ডেভেলপমেন্ট টিমের সদস্য ইউ জাউজাউ হটুন বলেন, যোগাযোগব্যবস্থার দুর্বলতার কারণে সঠিক তথ্য সংগ্রহে সমস্যা হচ্ছে। অনেক ঘটনার খবর এখনও প্রকাশ্যে আসেনি বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্প্রতি আরাকানে ল্যান্ড মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা বেড়ে গেছে। স্থানীয়রা বলছেন, রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা অবিস্ফোরিত মাইন অপসারণে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। এসব বিস্ফোরণ ইতিমধ্যে বহু মানুষের প্রাণ কেড়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মংডুর শিকা ফা গ্রামে এক যুবক মাছ ধরতে যাওয়ার পথে মাইনে পা দিয়ে নিহত হন। একই শহরের মিনগালারজি গ্রামে গরু চরাতে গিয়ে রোহিঙ্গা নাগরিক মনসুর আলম মারা যান। এর আগে দুজন কিশোর-কিশোরী মারাত্মক আহত হন; এক কিশোরীর পা কেটে ফেলতে হয়।

টাউংগুপে বোমা বিস্ফোরণে একজন নিহত হন, মেপনে এক শিশু মাইনে পা দিয়ে একটি পা হারায়। টাউংগুপের ইয়ানখোর গ্রামে আরেক বিস্ফোরণে একজন কিশোর নিহত ও আরেকজন আহত হয়।

আরাকানের এসব মাইন–আহত মানুষ মারাত্মক চিকিৎসাসঙ্কটে আছেন। অঙ্গ হারানো ব্যক্তিদের জন্য কৃত্রিম অঙ্গ পাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কারণ, ওই অঞ্চলের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে বৌদ্ধ সন্ত্রাসী ‘আরাকান আর্মি’। ফলে সেখানে নিরাপত্তা বিধিনিষেধ আর চিকিৎসা সরঞ্জামের অভাব প্রবল।

আরাকান রাজ্য এখন নতুন করে সংঘাতের কেন্দ্র। ২০২৩ সালের নভেম্বরে মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও বৌদ্ধ মিলিশিয়া আরাকান আর্মির মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে লড়াই চলছে। এতে হাজারো রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হয়ে খাদ্য ও চিকিৎসাসঙ্কটে ভুগছে, আর অনেকে সহিংসতা ও নির্যাতন এড়িয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।